তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
এখন পর্যন্ত অনেকেই অনেক লম্বা রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড করেছেন কিন্তু এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড এখনো কেউ করেননি। কারণ অনেক দেশের সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীল না, অনেক দেশে ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে, অনেক দেশে আবার বৈরি আবহাওয়া। অনেকেই আবহাওয়া আর খাবারের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না।
বিজ্ঞানী, অনুসন্ধানকারী আর ভ্রমণপ্রিয়রা ব্যতিক্রম কিছু খুঁজে বেড়ান সব সময়। পৃথিবীর কতোটুকুই বা আবিষ্কার করতে পেরেছে মানুষ? নতুন রোমাঞ্চের খোঁজে মানুষ ছুটে চলে নিরন্তর। কারণ প্রকৃতির আরও অনেক কিছুই এখনও উন্মোচিত হওয়া বাকি। তেমনই একটি বিষয় সামনে এসেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা হেঁটে যাওয়ার পথ। ইউরোপ, আফ্রিকা আর এশিয়ার মধ্য দিয়ে প্রকৃতি আর মানুষের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি রাস্তা। এই রাস্তা ধরে আপনি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে রাশিয়ার মাগাদানে আসতে পারবেন। পুরোটাই হেঁটে আসতে পারবেন। বিমান, ট্রেন, বাস কিংবা লঞ্চ, কোনো যানবাহনেই আপনাকে উঠতে হবে না। এই রাস্তা ২২ হাজার ৩৮৭ কিলোমিটার লম্বা। প্রতিদিন যদি ৮ ঘণ্টা করে হাঁটেন তবে ৫৮৭ দিন লাগবে আপনার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাশিয়া পৌঁছাতে। ১৯৪ দিন হাঁটা লাগবে যদি কোনো বিরতি ছাড়া হেঁটে চলেন। অবাক হচ্ছেন?
এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হেঁটে যাওয়ার রাস্তা, যেখানে কোনো বাঁধা ছাড়াই পায়ে হেঁটে রাশিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাশিয়া যাওয়া সম্ভব। যাত্রাপথে পড়বে অন্তত ১৭টি দেশ। ছয়টি টাইম জোন। যে এই রাস্তা ধরে হাঁটবেন, সে কয়েকটি ঋতু পরিবর্তনও দেখতে পাবেন। যাত্রাপথে পাবেন অনেক আবহাওয়া। এই যাত্রাপথকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হেঁটে চলার রাস্তা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মাউন্ট এভারেস্টে ১৩ বার উঠানামা করলে এই রাস্তার হেঁটে চলা পথের সমান হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে হেঁটে হেঁটে যেতে হবে রাশিয়ার মাগাদানে।
মাঝে পড়বে বোস্তাওয়ানা, জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, তানজানিয়া, উগান্ডা, দক্ষিণ সুদান, সুদান, জর্জিয়া, মিশর, জর্ডান, সিরিয়া, তুরস্ক, রোমানিয়া আর বেলারুস। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রাম লা আগুলাস থেকে শুরু হবে হাঁটা। হাঁটতে হবে কয়েকটি বিপজ্জনক স্থান দিয়েও। এরপর যেতে হবে জিম্বাবুয়ে, যেই দেশ বন্যপ্রাণির জন্য বিখ্যাত। এ যাত্রা চমকপ্রদ আর চ্যালেঞ্জিং। এরপর পড়বে মোজাম্বিক আর জাম্বিয়া। হেঁটে যাবেন উগান্ডার ন্যাশনাল পার্কের সামনে দিয়ে। দক্ষিণ সুদানে প্রবেশের পর ভয়ই লাগবে।
কারণ এ দেশটি চুরি ডাকাতির জন্য বিখ্যাত। এরপর সুদানে এসে পাড়ি দিতে হবে সাহারা মরুভূমির কিছু অংশ। সুদান থেকে মিশরে যাওয়ার ভারো রাস্তা নেই। মিল থেকে জর্ডানে ঢুকতে হবে। এরপর ইসরায়েল, এরপর যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া। সিরিয়া থেকে হেঁটে যেতে হবে তুরস্কে। এরপর জর্জিয়া, অবশেষে রাশিয়া। রাশিয়ায় এসে দেখতে হবে সাইবেরিয়ার বৈরি শীত। এই পথ ধরে হেঁটে পৌছে যাবেন রাশিয়ার শহর মাগাদানে।
এখন পর্যন্ত অনেকেই অনেক লম্বা রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড করেছেন কিন্তু এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড এখনো কেউ করেননি। কারণ অনেক দেশের সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীল না, অনেক দেশে ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে, অনেক দেশে আবার বৈরি আবহাওয়া। অনেকেই আবহাওয়া আর খাবারের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না।