স্বাধীনতা ঘোষণার মাইক্রোফোন জিয়ার জাদুঘরে থাকবে না, তা কালুরঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর। এ বাংলাদেশ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার। প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এ বীর চট্টলার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় সহানুভূতিশীল।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এসব কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, চলমান বৈশ্বিক করোনাকালে সাংবাদিকদের জন্য ১০ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কারো দয়ার দান নয়। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঈর্ষণীয় কর্মতৎপরতা দেখে জিয়াউর রহমান কিছু কুলাঙ্গারকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করেছে, এটাই জিয়ার অবদান। এ হত্যার বিচার বাংলার মাটিতে হবে। তার স্মৃতিতে চট্টগ্রামে কীসের জাদুঘর। সার্কিট হাউসে খুনির নামে জাদুঘর কেন থাকবে? জাতির পিতার খুনির নামে রাষ্ট্রের টাকায় জাদুঘর থাকতে পারে না। প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে থাকা এ জাদুঘর সরানোর জন্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকসহ চট্টগ্রামবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এমএ হান্নান। সেই ঘোষণার মাইক্রোফোন জিয়ার জাদুঘরে থাকবে না। তা কালুরঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে

বঙ্গবন্ধুর কন্যার যোগ্যতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১২ বছর ক্ষমতায়। আপনারা বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে সহযোগিতা করবেন। বাংলাদেশের ধ্বংসের ইতিহাস জিয়া পরিবারের সৃষ্টি। ধর্মের নামে রাজনীতি আর হতে দেওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুর সময় দেশে জিডিপি ছিলো ৯ দশমিক ৪। এ করোনাকালেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি পৃথিবীতে অনুকরণীয়। কাজ করলে ভুল হবে। ক্ষমার যোগ্য হলে ক্ষমা করবেন আর অযোগ্য হলে বিচার করবেন। আপনারা বীর চট্টলার সন্তান। আপনারা আমাদের চেয়ে ইতিহাস বেশি জানেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের কল্যাণে সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং বিশস্ত সন্তানতুল্য ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও আপনাদের এ চট্টগ্রামের সন্তান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কর্মদক্ষতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরণ করা হয়েছে। এ অর্জনের মাধ্যমে পৃথিবীর ৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ স্থান করে নিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দেশের অনেক কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান ড. হাছান মাহমুদ এবং আমাকে। এ মন্ত্রণালয়ের তথা সাংবাদিকদের উন্নয়নে আমরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।

যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ধন্যবাদ বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী।

সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব বরাবরাই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুঃসময়েও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা পাশে ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সশরীরে এসে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে তাঁর বদান্যতায় প্রেস ক্লাব ভবনের উপরে বঙ্গবন্ধু হল নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। মতবিনিময় সভার শুরুতে প্রেস ক্লাব সভাপতি প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁর হাতে প্রেস ক্লাবের শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনের উপরে বঙ্গবন্ধু হল এবং প্রেস ক্লাবের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল পরিদর্শন করেন।

এ সময় প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি স ম ইব্রাহীম, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারসহ প্রেস ক্লাব, সিইউজে, বিএফইউজেসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।