তিন স্বামী আর একাধিক এনআইডি রাখা প্রতারক নারীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত

আইন আদালত ডেস্ক:

এক স্বামীর সংসার চলাকালীন বৈধ-অবৈধ প্রক্রিয়ায় আরও দুই পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত মিনু আক্তারকে (৩৬) জামিন দেননি আদালত।

বুধবার (২৯সেপ্টেম্বর) দুপুরে দীর্ঘ শুনানির পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মওলা মুরাদ।

তিনি জানান, বহুরূপী এই নারী কখনো মিনু আক্তার, কখনো নাছমিন আক্তার সিমু আবার কখনো মোছাম্মৎ ফাতেমা খাতুন নামে তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি) ব্যবহার করে এক স্বামীর সংসার চলাকালীন বৈধ-অবৈধ প্রক্রিয়ায় আরও দুই পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এমন সব অভিযোগে ভুক্তভোগী এক স্বামী মো. ইমাম হোসেনের (৩৮) মামলায় তিনি এখন কারাগারে আছেন।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আসামীর আইনজীবী তার জামিন আবেদন করলে মহামান্য আদালত দীর্ঘ শুনানির পর আসামী জামিন না মঞ্জুর করেন।

এর আগে, গত ৮ সেপ্টেম্বর, এক সংসার চলাকালীন মিনু আক্তার (৩৬) ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি) ব্যবহার করে আরও দুই পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অভিযোগ এনে এক স্বামী মো. ইমাম হোসেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

আদালত মামলাটি সরাসরি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদলতে প্রেরণ করেন।এ মামলায় অভিযুক্ত নারীর অন্য দুই স্বামীকেও আসামি করা হয়। তারা হলেন- মোস্তফা জামিল (৩৭) ও রাশেদ (৩৯)।

মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন উল্লেখ করেন, তিনি একজন কাতার প্রবাসী। তার গ্রামের বাড়ি মিরসরাই উপজেলায়। বর্তমান ঠিকানা বায়েজিদ বোস্তামী থানার রুবি গেট এলাকায়। অভিযুক্ত তার স্ত্রী মিনু আক্তারের গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা গ্রামে। তবে বর্তমানে তিনি গাজীপুরে টঙ্গী এলাকায় থাকেন।ইমাম কাতারে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিনুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর দেশে এসে ২০১৯ সালে ৬ ফেব্রুয়ারিতে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের ২০ দিন পর তিনি পুনরায় কাতার চলে যান। কাতারে যাওয়ার পর ইমামের সঙ্গে তার স্ত্রীর মনোমালিন্য শুরু হয়। তবে মনোমালিন্যের পরও নানা সময়ে স্ত্রীর জন্য তিনি প্রায় সাত লাখ টাকা পাঠান।

এদিকে ইমাম বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন তার স্ত্রী বৈধ-অবৈধ প্রক্রিয়ায় আরও দুই পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তার স্ত্রীর রয়েছে তিনটি আইডি কার্ড, দুটি মোবাইল ও ১০ থেকে ১২টি সিম। এসব কিছুর মাধ্যমে নানাভাবে তার স্ত্রী প্রতারণা করে থাকেন। ইমাম বিষয়টি জানালে উল্টো স্ত্রী তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য স্বামী ও প্রেমিকা মিলে তাকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার হুমকিও দিতে থাকে।