নিজস্ব প্রতিবেদক :
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মাত্র কয়েক মিনিটেই মোবাইলের আই.এম.ই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল বিক্রি করার সংঘবদ্ধ চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকালে উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিণের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এ তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আই.এম.ই আই নম্বর পরিবর্তন ওঁদের কাছে বাঁ হাতের কাজ। খুব সহজেই মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই যে কোন মোবাইল এর আগেই পরিবর্তন করতে পারদর্শী তারা।
এর আগে বুধবার (৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন, সিডিএ মার্কেট্, রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুণ্ডিতে অভিযান চালিয়ে ১১৭টি চোরাই মোবাইল, আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ৩টি ল্যাপটপসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এসময় বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি দোকানে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- ফেনীর নতুন বাজার এলাকার মো. সেলিমের ছেলে মো. সাজ্জাদ (২০), সাতকানিয়া ৯ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম হাটিয়া এলাকার কবির আহমেদের ছেলে হাবিবুল্লাহ মেজবাহ (২৫), ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকার বদিউল আলমের ছেলে মো. রাশেদ (২০)।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হতো এসব মোবাইল জানিয়ে বলেন, পুরাতন রেলস্টেশনে বাগদাদ হোটেলের গলিতে সাজ্জাদকে সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে তল্লাশি করে। এ সময় তার হাতে থাকা ১১টি শপিং ব্যাগে ৩৫ টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। সাজ্জাদ পুলিশের কাছে স্বীকার করে এসব মোবাইল চোরাইকৃত। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায়, সিডিএ মার্কেট রয়েল প্লাজায় অবস্থিত ইনোভেটিভ ফোন কেয়ার এর প্রোপাইটর মো. হাবিবুল্লাহ মিসবাহ এবং তার কর্মচারী মো. রাশেদের কাছে চোরাইকৃত মোবাইলগুলোর আইএমইআই পরিবর্তন করতে যাচ্ছিল। তারা মাত্র কয়েক মিনিটেই সব ব্র্যান্ডের মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ আরও জানায়, সাজ্জাদের দেওয়া তথ্য মতে সিডিএ মার্কেট ও তামাকুণ্ডি লেইনে তল্লাশি চালিয়ে হাবিবুল্লাহ মিসবাহ ও তার কর্মচারী রাশেদকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে আরও বেশ কয়েকটি চোরাই মোবাইল এবং আইএমইআই পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ উদ্ধার করে পুলিশ।
উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘তারা আইএমইআই পরিবর্তন করে বিভিন্ন জেলায় তা সরবরাহ ও বিক্রি করতো। এছাড়া নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা এসব মোবাইল ব্যবহার করে থাকে।’তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে কয়েক মিনিটে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ফেলে। এছাড়া যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের লক খুলে তা আবার বিক্রি করে দিতো।