ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে আতঙ্ক এখন ইসলামিয়া কলেজের নাহিদ—কায়সার গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ইসলামিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফরম পূরণে কলেজের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে তিন দিনের টানা সংঘাত ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বলি হলো ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভী।

আহত সেই ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভী এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইডিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।

২৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত ৯ টায় উত্তর নালাপাড়ায় রিজভীকে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা আহত রিজভীকে চমেক হাসপাতাল ভর্তি করে। ভর্তির পর থেকে মধ্যরাতে এ পর্যন্ত আহত ছাত্রলীগ নেতার শরীরে ৭ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে বলে চমেকের একটি সূত্রে জানিয়েছে।

আহত শিহাব উদ্দিন রিজভী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তালেব রনির অনুসারী। আবার আবু তালেব রনি হচ্ছেন ইসলামিয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদের অনুসারী।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র লীগের আধিপত্যকে বিস্তারের বিষয়কে কেন্দ্র করে গত তিনদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের চার অনুসারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এসব গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তালেব রনি, ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম পারেল এবং কলেজের এজিএস নোমান সাঈদ।

অভিযোগ উঠেছে, শিহাব উদ্দিন রিজভীকে একা পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে কুপিয়ে আহত করে তিন গ্রুপ সন্ত্রাসীরা এ সময় তাঁর মোটরসাইকেলও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম পারেল এবং কলেজের এজিএস নোমান সাঈদ ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের অনুসারী হলেও এই তিন গ্রুপ মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও ইসলামিয়া কলেজের সাবেক এজিএস আশেকুন্নবী চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণে চলে। আবার আশেকুন্নবী চৌধুরীও ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এদিকে এজিএস নোমান সাঈদকে সদরঘাট থানার ইসলামিয়া কলেজের সামনে থেকে ধাওয়া করে দারোগাহাট রোডের মালুম মসজিদে এলাকায় নিয়ে যায় আওয়ামী লীগ নেতা আবু কায়সার গ্রুপ। এনিয়ে খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপ ও আবু কায়সার গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে অত্র এলাকায়।

এজন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়ন করা হয় কিন্তু ২৬ আগস্ট সকাল থেকে এই দুই গ্রুপে ও উপ-গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চললেও রাতে ঘটে ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভী কোপানোর ঘটনা।

এ বিষয়ে সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, ইসলামিয়া কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। তবে হামলাকারীদের আটকের জন্য অভিযান চলছে।

জানা গেছে, কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে বিবাদ শুরু হয় গত ২৩ আগস্ট থেকে। এর দুই দিন পর নিউমার্কেট এলাকায় দুই গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এর রেশ ধরেই বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে ফের ঝামেলা শুরু হয় খলিলুর রহমান নাহিদের চার উপ-গ্রুপের মধ্যে।