কাগজের বদলে এলো বিদেশি সিগারেট

চট্টলা ডেস্ক : ‘এফোর’ সাইজের কাগজ আমদানির চালানে পলিথিনে মোড়ানো সিগারেট। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা এ চালানে ২৪ হাজার ৯৯০ কার্টনে ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার শলাকা ওরিস ও মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।

মিথ্যা চালানে সিগারেট পাচারের মাধ্যমে প্রায় ১২ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান এক কাস্টমস কর্মকর্তা।

নিয়ম অনুযায়ী সোমবার (১৫ মার্চ) ফোর্সড কিপ ডাউন করে পণ্য পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চৌকস অডিট, ইনভেস্টগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম। কনটেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ। নবম থেকে পরবর্তী প্যালেটগুলোতে ৪৮ কার্টনের মধ্যে উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্তর পর্যন্ত ৩৬টি কার্টন খুলে উপরে মিলে এক রিম এফোর সাইজের কাগজ এবং এর নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট।

কায়িক পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৯৯০ কার্টুন (৪৯ লাখ ৯৮ হাজার) শলাকা ওরিস এবং মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এছাড়া এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৩ দশমিক ৭ টন।

এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি একই প্রক্রিয়ায় আমদানি করা অপর একটি প্রতিষ্ঠানের (করিম ট্রেডিং) পণ্যচালান জব্দ করা হয়। তাতে কায়িক পরীক্ষায় ২৩ হাজার কার্টন (৪৬ লাখ শলাকা) ইজি ও মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের (১৪১ পাঁচলাইশ, মায়ানীড়) আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেকে স্টেশনারি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ‘এফোর’ সাইজের কাগজ ঘোষণা দিয়ে এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইর জাবেল আলি বন্দর থেকে ‘এমভি এক্স-প্রেস নুপটেজ’ জাহাজে করে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে এলেও পণ্য খালাসের লক্ষ্যে কোনো কার্যক্রম নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

ঝুঁকিপূর্ণ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বন্দর, পণ্য ও পণ্যের তৈরি দেশ বিবেচনায় কনটেইনার সংশ্লিষ্ট বিল অব ল্যাডিং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ব্লক করে রাখে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।

কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার মো. রেজাউল করিম জানান, এ পণ্যচালানের মাধ্যমে চোরাচালানের অপচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে সেই অপচেষ্টাও নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে প্রায় ১২ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।