চট্টগ্রামে লাখো মানুষের ঢল ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে

নগর প্রতিবেদক :

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঐতিহ্যবাহী ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) জশনে জুলুস লাখো মানুষের অংশগ্রহণেই চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টায় নগরের মুরাদপুর আলমগীর খানকাহ্-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বের হয় পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর (স.) জশনে জুলুস। এবার জশনে জুলুস এ প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেন হজরতুল আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ)।

চট্টগ্রামসহ আশেপাশের বিভিন্ন ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উৎসাহিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দলে দলে জেলা উপজেলাগুলো থেকে এসে মুসল্লিগণ হামদ-নাত আর দরুদ পাঠের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে জুলুসে অংশগ্রহণ করেন।

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক হয়ে বিবিরহাট, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট ঘুরে পুনরায় মুরাদপুর বিবিরহাট প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে ফিরে আসে জুলুসটি। এরপর উক্ত স্থানে মাহফিল শুরু হয়। সব শেষে করোনামুক্তি ও বিশ্বশান্তির জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হবে।

জুলুসকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে নগরজুড়ে। জুলুসের পতাকা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, তোরণে সেজেছে নগরের মোড়, সড়কদ্বীপ ও সড়ক বিভাজক।

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস অনুষ্ঠিতআনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জুলুস শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, আল্লামা তৈয়ব শাহ (র.) ৭৪ সালে এ জুলুসের প্রবর্তন করেন। আমরা এ জুলুস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এবারের বার্তা হচ্ছে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। করোনাকালে আপনারা দেখেছেন গাউসিয়া কমিটি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন কাফন ও সৎকারে সহযোগিতা করে আসছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি (বায়েজিদ) মো. শাহ আলম বলেন, জুলুসকে ঘিরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত আছেন।

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস অনুষ্ঠিতউল্লেখ্য, মানবতার মুক্তিদূত বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জন্ম ও ওফাত দিবস আজ ।

সাড়ে ১৪০০ বছর আগে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের হিজরি ১২ রবিউল আউয়াল মক্কার কুরাইশ বংশে জন্মলাভ করেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ এ রাসূল সা:। ইসলামের সুমহান দ্বীন ও জীবনবিধান প্রচার শেষে ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ১১ হিজরির এ দিনে ইন্তেকাল করেন তিনি। এ জন্য দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ এ মহামানবের জন্ম ও মৃত্যু একই দিনে হলেও মুসলিমরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা: বা জন্ম-উৎসবের দিন হিসেবে পালন করে থাকে। এ উপলক্ষে আজ বুধবার সরকারি ছুটি।

দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে বাণী দিয়েছেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা: উদযাপনে ১৫ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।