নাচে-গানে উজ্জ্বল সুজনের জোৎস্না উৎসব

রুবেল দাশঃ চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে উছলে পড়ে আলো ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধসুধা ঢালো। গানের এ লাইনের মতই শনিবার সন্ধ্যায় নগরের লালদীঘি পাড়ে বাঁধ ভেঙ্গেছিল চাঁদের হাসির। ভরা পূর্ণিমার আলোয় নাচ-গান-আড্ডা-আবৃত্তি যেন পেয়েছিল অন্য মাত্রা।

ঐতিহ্যবাহী লালদিঘি পার্কে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ জ্যোৎস্না উৎসবের আয়োজন করে । করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সুজনের এ ব্যতিক্রমী জোৎস্না উৎসবের প্রশংসা করে উপমন্ত্রী বলেন,আমাদের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন যথার্থই বলেছেন, চট্টগ্রাম শহরকে বলা হয় বিত্তের শহর, অর্থনীতির শহর। বিত্তের শহরকে চিত্তের শহরে পরিণত করার একটি প্রয়াস আসলেই আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রশাসক মহোদয়ের এই জ্যোৎস্না উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে। নাগরিক সেবা নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর অনেক মানুষের মনে যখন অমাবশ্যা দেখা দিয়েছিল, তখন তিনি পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে এই শহরে এসেছিলেন মানুষের কাছে।’

সভাপতির বক্তব্যে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমরা জ্যোৎস্না উৎসবের আয়োজন করেছি। লালদিঘীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আমরা এ শহরের মানুষেরা দেখব অনিন্দ্য জোছনা। আমরা চাই এ জোছনা সবার অন্তরে গন্ধসুধা ঢালুক। সোমবার এখানে কবিতা উৎসব ও পিঠা উৎসব হবে। আরেকটা উৎসব ছিল, করতে পারলাম না। ঘুড়ির মেলা। যিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন উনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। আমি মনে করি চট্টগ্রামের মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন’

এ সময় মঞ্চে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম মোহিত উল আলম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তারও ছিলেন।
শনিবার রাত ৮টায় ‘জ্যোৎস্না উৎসব’ শুরুর আগেই লালদিঘীর পাড়ের অনুষ্ঠানস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আবৃত্তিশিল্পী কঙ্কন দাশের উপস্থাপনায় কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রীদের পরিবেশনায় ‘তুমি নির্মল করো মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। ‘চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে উছলে পড়ে আলো, ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধসুধা ঢালো’ এবং ‘কর্ণফুলীর সাম্পান মাঝি আমার মন’- গান দুটিও পরিবেশন করেন ছাত্রীরা।

এরপর জ্যোৎস্না নিয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব ছড়াকার আলেক্স আলীম, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিদ্যুৎ বড়ুয়া, নাট্যজন সাইফুল আলম বাবু, আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী। নৃত্যশিল্পী অনন্য বড়ুয়ার নির্দেশনায় প্রাপন একাডেমির শিল্পীরা নাচ পরিবেশন করেন। এরপর সমবেতরা সবাই জড়ো হন লালদিঘীর পাড়ে। নিভিয়ে দেওয়া হয় আলো। আলোর প্রতীক হিসেবে ওড়ানো হয় ফানুস। তখন মঞ্চে বাজছিল চাটগাঁইয়া গান।