চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুর্বৃত্তের হামলায় পৌরসভা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জমির উদ্দীনসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১০টায় উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ তিনজন হলেন- পটিয়া পৌরসভা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. জমির উদ্দীন (৫৩), হাইদগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম (৩৮), যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন (৪০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এমদাদ হোসেন।
তিনি বলেন, আহতদের অবস্থা ভাল না হওয়ায় তাদের চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
আহতদের হাসপাতালে আনয়নকারী আনোয়ারের বরাত দিয়ে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, আগামী ২৩ এপ্রিল উপজেলা যুবলীগের ইফতার পার্টির জন্য এক মুক্তিযোদ্ধাকে দাওয়াত দিয়ে আসছিলেন যুবলীগের কয়েকজন নেতা।
রাত ১০টায় আমজুরহাট এলাকায় শিবির ক্যাডার সোহেল ও ছোট লিটনসহ ১০/১২ জন তাদের ওপর হামলা চালায়। শর্টগানের গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
হামলার শিকার যুবলীগ নেতা জমির উদ্দীন জানান, ধলঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহম্মদকে দাওয়াত দিয়ে আসার সময় আমজুরহাট এলাকায় আমাদের ওপর অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে হামলা চালানো হয়।
জানা গেছে, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের পক্ষ হতে আগামী ২৩ এপ্রিল পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের এক ইফতার মাহফিলের দাওয়াত দিতে জঙ্গল খাইন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদকে তাঁর বাড়িতে দাওয়াত কার্ড দিয়ে ফেরার পথে অস্ত্রধারীরা বদিউল আলমের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ডি এম জমির উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফু ও যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে এ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ জমির উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম সাইফু ও ইকবাল হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রক্তিম দাশ বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ তিনজন বেশ কয়েকজন মিলে হাসপাতালে আনেন। তাদের অবস্থা গুরুতর দেখে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবের নেতৃত্বে আমার নেতা-কর্মীদের ব্রাশ ফায়ার করা হয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে। সামশুল বুঝতে পেরেছেন, পটিয়ায় তাঁর পায়ের তলায় মাটি নেই। সে পটিয়াতে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হতে যাচ্ছে। তাই আগামী শনিবার আমার ইফতার মাহফিল বানচাল ও আমার নেতা কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করে তাঁর ভাই সন্ত্রাসী নবাবকে দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
তবে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব বলেন, ‘আমি বুধবার সকালে ওমরাহ হজ পালন করতে যাব। এখন পর্যন্ত আমি ওমরাহ করার কাপড়চোপড় কিনতে ব্যস্ত আছি। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি পটিয়ায় যাইনি। ঘটনা কারা ঘটিয়েছে একমাত্র আল্লাহ পাক দেখেছেন।’
পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান বলেন, ‘জঙ্গল খাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আছি। সবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছি। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’