আসামি ধরতে গিয়ে এক নারীকে লাতি মারা ও তল্লাশির নামে দেড় লাখ টাকা জব্দ করার অভিযোগে সীতাকুণ্ড থানার এসআই প্রত্যাহার
সীতাকুন্ড প্রতিনিধি :
সীতাকুণ্ড থানার এস আই মাহবুব মোরশেদ অনেকটা আক্ষেপ দেখিয়ে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আপনারা ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখতে পারেন। পরোয়ানাভূক্ত আসামি ধরতে গিয়ে এরকম ষড়যন্ত্রের শিকার হলে চাকরি করা যাবেনা।’
এর আগে, আসামি ধরতে গিয়ে না পেয়ে আসামির স্ত্রীকে লাতি মারা ও তল্লাশির নামে দেড় লাখ টাকা জব্দ করার অভিযোগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মডেল থানার এস আই মাহাবুব মোরশেদকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।
রোববার (১৭ এপ্রিল) রাতে এ প্রত্যাহার আদেশ হয়েছে। এ আদেশ দিয়েছেন সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম।
জানা গেছে, একই দিনে খালেদা আক্তার নামের এক গৃহিণী পুলিশ সুপার বরাবর এসআই মাহবুব মোর্শেদের বিরুদ্ধে মারধর ও টাকা লুটের অভিযোগ আনেন। লিখিত অভিযোগে খালেদা আক্তার উল্লেখ করেন, শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় এস আই মাহাবুব মোরশেদ ৫ জন পুলিশ কন্সটেবলসহ খালেদা আক্তারের স্বামী পরোয়ানাভূক্ত আসামি নুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে যান। তাকে না পেয়ে এস আই মাহবুব মোরশেদ আলমারির চাবি দিতে বলেন। খালেদা আক্তার চাবি দিতে অস্বীকার করলে তাকে লাথি মারেন। এরপর চাবি নিয়ে ঘরের আলমারি তল্লাশি করে গরু বিক্রি করা দেড় লাখ টাকা ও ছেলে রিয়াজ উদ্দিন হৃদয়ের স্কুল-কলেজের সার্টিফিকেট জব্দ করে নিয়ে যায়। পর দিন রোববার (১৭এপ্রিল) খালেদা আক্তার ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দায়ের করেন।
অভিযোগ পত্র গ্রহণ করার পর কপি সীতাকুণ্ড সার্কেল অফিসে জমা দিতে বলা হয়। খালেদা আরও অভিযোগ করেন, জমা দিতে গেলেও থানা থেকে তাকে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে অভিযোগকারী খালেদা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
এদিকে, যে এসআই য়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই এস আই মাহবুব মোরশেদের কাছে বিষয়টি সম্পর্কেও জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব বানোয়াট ও মিথ্যা কথা বলা হয়েছে অভিযোগ পত্রটিতে। ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখেন অন্য কিছু দেখতে পাবেন। এ সময় তিনি এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন বলেও জানান।
অন্য কিছু কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় এক ব্যাক্তি এবং অপর একজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুইটি মোবাইল নাম্বার থেকে তাকে গালাগালাজ করা হয়েছে ও হুমকি দেয়া হয়। সেই সাথে ফোনে ফোনদাতা বলেছে কিভাবে তিনি পুলিশের চাকরি করেন দেখে নিবেন তারা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিয়ে বারোটা বাজিয়ে দেবেন বলেও হুমকি দেয়া হয় তাকে। পরে এক সময় দেড় লক্ষ টাকা দিলে মিটমাট করিয়ে দেবার কথাও বলেন সাংবাদিক পরিচয় দেয়া ওই ব্যাক্তি।
এক সময় এস আই মাহবুব মোরশেদ আক্ষেপের সাথে বলেন, ‘পরোয়ানাভূক্ত আসামি ধরতে গিয়ে এরকম ষড়যন্ত্রের শিকার হলে চাকরি করা যাবেনা’ এবং এক পর্যায়ে উল্টো প্রতিবেদককেই প্রশ্ন করেন, ‘সমাজ তথা রাষ্ট্রে খারাপের সংখ্যা বেশি বলেই কি তাদের সাথে তাল মিলাতে হবে? এটা সম্ভব না আমার পক্ষে।