পিতার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে রেখে, ৫০ লাখ টাকার জন্য বিবাদ সন্তানদের

কর্ণফুলী প্রতিনিধি:

অ্যাম্বুলেন্সে পিতার লাশ। লাশ রেখে বাবার অফিস থেকে পাওয়া ৫০ লাখ টাকার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে ছেলেমেয়েদের বিবাদ ও বিরোধ চলছিল। অ্যাম্বুলেন্সে আরো শীতল হচ্ছিল পিতার লাশ। এভাবে চলে গেল ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু এখনো দাফন হয়নি। নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কেরানীর বাড়িতে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পিতার মৃত্যুর খবর শুনে সন্তানদের কান্নায় ভেঙে পড়ার কথা। কিন্তু তারা অ্যাম্বুলেন্সে লাশ রেখে পিতার রেখে যাওয়া ৫০ লাখ টাকার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এটা লজ্জার। প্রায় ২৪ ঘণ্টা তার লাশ পড়েছিল অ্যাম্বুলেন্সে।

জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান ক্যানসার আক্রান্ত মনির আহম্মদ। তিনি পদ্মা অয়েল গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা। মৃত্যুর পর তার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়। স্থানীয়দের তথ্যমতে, তিনি চাকরি থেকে অবসরের সময় কোম্পানি থেকে ৫০ লাখ টাকা পান। সেই টাকা ভাগাভাগি না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দিচ্ছিলেন না তার সন্তানরা। বিষয়টি সমাধানে সালিশি বৈঠকও ডাকা হয়। তাতেও সমাধান না হলে ঘটনাস্থলে আসে কর্ণফুলী থানা পুলিশ।

বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মনির আহম্মদ ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সময় তার দুই সন্তান সৌদি আরব প্রবাসী আলমগীর ও দেশে থাকা জাহাঙ্গীর পিতার খোঁজ নেননি। মেয়েদের হাতেই চিকিৎসার টাকা জমা রাখেন মনির আহম্মদ। তার তিন মেয়ে পিতার চিকিৎসা ভার নেন। লাশ দাফন করা হয়নি। তার এক সন্তান আগামীকাল (সোমবার) দুপুরে দেশে এলে লাশ দাফন ও টাকার ভাগের সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মনির আহম্মদের বড় ছেলে জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, তাদের বোন বিবি আক্তার তার বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লাখ টাকা একাই তুলে নিয়েছে। তিনি সালিশি বৈঠকে এর সমাধান করতে চান।

কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বিষয়টি পারিবারিক হওয়ায় পুলিশ পরে ফিরে আসে। আজ সোমবার তাদের প্রবাসী সন্তান দেশে এলে এ নিয়ে একটি সমাধান হবে এবং পিতার লাশ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে।