প্রত্যেক জেলায় হোমিওপ্যাথি রিসার্চ ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে হবে : জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যানের ২৬৭তম জন্মবার্ষিকী ও হোমিওপ্যাথি দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়।

কর্মসূচীর মধ্যে ছিল দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা র‌্যালি ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ।

রবিবার (১০ এপ্রিল) বিকাল টায় জেলা শাখা কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা উদ্বোধন করেন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ।

জেলা শাখার সদস্য সচিব মুহাম্মাদ মামুন সিকদার’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট গবেষক ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির কেন্দ্রীয় সদস্য আবু ইউসুফ,সদস্য আক্তার হোসাইন, সদস্য আনোয়ার হোসাইন সুমন সহ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ হোমিওপ্যাথি দিবস ২০২২।হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ডা. স্যামুয়েল হ্যানিমেনের ২৬৭তম জন্মবার্ষিকীর দিনে পৃথিবীব্যাপী এ দিবসটি পালন করা হয়।২০০৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী হ্যানিমেনের জন্মদিন ‘বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

তবে ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশে যাত্রা শুরু বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবসের এবং বিশ্ব হোমিওপ্যাথি আন্দোলনে যুক্ত হয় বাংলাদেশ।আমরা সবাই জানি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্ম জার্মানিতে। বিজ্ঞানী ডা: স্যামুয়েল হানেমানের আবিষ্কারক (১০ এপ্রিল ১৭৫৫ থেকে ২ জুলাই ১৮৪৩ ছিল তার জীবনকাল)।

তিনিই প্রথম চিকিৎসাবিজ্ঞানী যিনি ভেষজ বস্তুকে শক্তিকরণ করে তা সুস্থ মানবদেহে পরীক্ষার মাধ্যমে ওষুধের রোগজ শক্তির আবিষ্কার করেন, যা তার আগে কোনো বিজ্ঞানী করেননি। তাই আমরা তাকে শ্রদ্ধা করি বিপ্লবী বিজ্ঞানী হিসেবে। বিপ্লবী এ বিজ্ঞানীর জন্মবার্ষিকী বিশ্বব্যাপী পালিত হয়,এই দিনে পৃথিবীর আর কোনো বিজ্ঞানীর জন্মদিন এভাবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় না। ২০০৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী হানেমানের জন্মদিন পালিত হচ্ছে বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস হিসেবে। বিজ্ঞানে কৃত্রিম রোগ আবিষ্কার স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৭৯০ সালে পৃথিবীর মানুষ প্রথম জানতে পারে তার আবিষ্কারের কথা। আজকের দিবসে হানেমানের কিছু প্রবাদ তুল্য উক্তি বলতে চাই রোগীকে চিকিৎসা কর রোগকে নয়।

অথচ কিছু কিছু হোমিওচিকিৎসক বের হয়েছে, এরা রোগীর লক্ষণ নির্বাচন না করে রোগের নামে চিকিৎসা দিয়ে থাকে, তাই আজকের এই দিনে হানেমানের কথা স্বরন করে, হানেমানের অতিতের সব গুন গুলা মাথায় রাখতে পারলে সেই হল প্রকৃত হোমিওপ্যাথ। হানেমান একটি কথা বলতেন; আমি বৃথা জীবন ধারন করিনি, যা ভাল তা শক্ত করে ধরব” সব কিছুই প্রমাণ করব।বর্তমানে হোমিওপ্যাথি কিছু সফলতা আছে।

ঘনবসতির এই দেশে সরকারের শত চেষ্টার পরও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি৷ হতদরিদ্র মানুষ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে খুব সহজেই কাছে পাচ্ছে৷ পাশাপাশি এই চিকিৎসা খরচ স্বল্পমূল্যে থাকার কারণে হতদরিদ্র মানুষ এই চিকিৎসা বেশি গ্রহণ করছেন৷ আমাদের দেশি এবং আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ এই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিচ্ছেন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপেও একাধিকবার এটাই প্রমাণিত হয়েছে৷

আজকের হোমিওপ্যাথি দিবস থেকে হোমিওপ্যাথির উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হলো’-

১/ পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চিকিৎসালয়ে গবেষণা করার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।

২/হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

৩/ ফেনী সহ সারা বাংলাদেশে তথাকথিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে ভেজাল ঔষধ আর গ্যারান্টি দিয়ে চিকিৎসা করা, বিভিন্ন রোগের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে চিকিৎসা করানো বন্ধ করতে হবে।