ফেনীতে পরশুরাম থানা পুলিশের সাথে র‍্যাব সদস্যদের মারামারি, আহত ৪

ফেনী প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের ফেনী জেলার পরশুরামে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে দুই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে পরশুরাম উপজেলা সদরের কলেজ রোডে পরশুরাম থানা-পুলিশ ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) সদস্যদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই বাহিনীর ৪ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- পরশুরাম থানার এএসআই মো. রেজাউল করিম, এএসআই মোহাম্মদ ইব্রাহিম, কনস্টেবল মোহাম্মদ নুরুন্নবী ও মাহবুব হোসেন।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবদুল খালেক মামুন পুলিশের দুজনকে ভর্তি ও অপর দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সদরের কলেজ রোডে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি হয়। তাদের মধ্যে উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. রেজাউল করিম ও পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ নুরুন্নবীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপর দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ সময় দুই বাহিনীর সদস্যরাই সাদা পোশাকে ছিলেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ফেনীর র‌্যাব-৭ বাহিনীর অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল জাবের ইমরান বলেন, পরশুরাম সদরে র‍্যাব-পুলিশ হাতাহাতির ঘটনাটি মূলত উভয় বাহিনী সাদা পোশাকে থাকায় ভুল বোঝাবুঝিতে হয়েছে মাত্র।

ফেনী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

বিষয়টি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাশকুর রহমান জানিয়েছেন, গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে কথা-কাটাকাটি হয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুই বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে সমাধান হয়ে গেছে। অর্থাৎ, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি অবসান হয়েছে।

পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। র‍্যাব সদস্যরা থানায় এসেছেন। আমার উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেই এমনটাই জানতে পেরেছি।

এদিকে, পরশুরাম থানার এক এসআই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সু্বার বাজারের দিক থেকে একটি সাদা প্রাইভেটকারকে আসতে দেখে থানার পুলিশ সদস্যরা উপজেলা সদরের কলেজ রোডে গাড়িটিকে থামতে সংকেত দেন। কিন্তু র‍্যাব সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমেই নিজেদের পরিচয় না দিয়ে তর্কবিতর্ক ও বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে, পুলিশ সদস্যদের সাথে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এ সময় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়।

পরিচয় পেয়েও কেন মারামারিতে জড়ালেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আগে পুলিশ সদস্যরা পরিচয় দেওয়ার পরও র‌্যাব সদস্যরা তাদেরকে মারধর করেন।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী সুবার বাজারের দিক থেকে একটি সাদা প্রাইভেট কারকে পরশুরাম সদরের কলেজ রোডে পৌঁছালে টহলরত পুলিশের একটি টিম কারটির গতিরোধ করেন। এক পর্যায়ে প্রাইভেট করের যাত্রীরা পুলিশ সদস্যদের সাথে তর্কবিতর্ক শুরু করেন। এ সময় তাদের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারামারি শুরু হয়। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।