বোয়ালখালীতে স্কুল ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রদের বিক্ষোভে শিক্ষক গ্রেফতার

বোয়ালখালী প্রতিনিধি :

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে গোমদন্ডী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের দশম শ্রেণির ছাত্র মো. সাইদুল হককে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিঠিয়ে গুরুতর আহত করেছে ওই বিভাগেরই শিক্ষক মো. সাইফ হোসেন।

রবিবার (২২ মে) বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে পরিবার থানায় মামলা করতে চাইলে মামলা না নিয়ে আপোষের প্রশ্ন আসাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা উপজেলা সদরের মূল সড়কে এসে বিক্ষোভ করে। এদিকে বিকেলে মামলা নেয়া হয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত শিক্ষককে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈনুল আবেদীন নাজিমের সেলফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তিনি কল রিসিভি করনেনি।

তবে ওই স্কুলের কয়েক শিক্ষক জানান, ইয়ং হওয়াতে সাঈফ হোসেন রাগ দমিয়ে রাখতে পারেনি। ছাত্রও অনেকটা বড় হয়ে যাওয়াতে শিক্ষকের আদেশকে তাচ্ছিল্য করছিলো।

বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল করিম বলেন, থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকালে দশম শ্রেণির ক্লাস নেয়ার সময় শিক্ষার্থী সাইদুল সহপাঠীদের সাথে হাসাহাসি এবং দুষ্টুমি করছিল। বিষয়টি শিক্ষক সাইফের নজরে আসলে তিনি মঈনুলকে ডেকে হাসাহাসি করতে বারণ করেন। এ সময় শিক্ষকের সাথে ছাত্রের বাক্য বিনিময় হলে শিক্ষক প্রথমে চড় থাপ্পড়, পরে বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন সাইদুলকে। বেত্রাঘাতের কারণে শিক্ষার্থী সাইদুল গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। তার সহপাঠিরা তাকে ধরে প্রধান শিক্ষককের কাছে নিয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী সাইদুলকে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন এবং বিষয়টি দেখবেন বলেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থী সাইদুল হকের ভাই মোমিনুল হক ও থানা পুলিশের এসআই সুমন কান্তির সহায়তায় আহত সাইদুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. সাইফ হোসেন ওই বিদ্যালয়ের ভোকেশনালের খণ্ডকালীন শিক্ষক। তিনি কম্পিউটারে ডিপ্লোমা নিয়ে লেখাপড়া করছেন। বাড়ি জামালপুর হলেও দীর্ঘদিন পশ্চিম গোমদন্ডী জমাদার হাট এলাকায় বসবাস করছেন।

এ দিকে এ ঘটনায় ২০১৩ সালের শিশু আইনে মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।

আহত শিক্ষার্থী সাইদুক হকের বাবা আবদুল বারেক জানান, আমি স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে আছি। শিক্ষক শাসন করবে, তবে কতুটুকু করবে তার সীমা আছে। আমার ছেলের বিষয়টি মধ্যযুগীয় কায়দায় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় গেলে আপোষের প্রস্তাব দেয়া হয়। পরে বিকেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মামলা নিতে বিক্ষোভ করলে থানায় মামলা নেয়া হয়।