চন্দনাইশে পাহাড় কাটার সংবাদ প্রচারের জের !
চন্দনাইশ প্রতিনিধি:
চন্দনাইশে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন আয়ুব মিয়াজী (৩২) নামের এক মফস্বল সাংবাদিক।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার দোহাজারীস্থ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘আয়ুব মিয়াজী কম্পিউটার, কমার্শিয়াল এন্ড টেশনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট’ সেন্টারে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে এই মফস্বল সাংবাদিককে। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে দোহাজারী হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মিয়াজী পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সংবাদ করায় এবং এ পাহাড় কাটার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যকদর্শী সূত্র থেকে জানা যায়, ঘটনার সময় মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজী তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। এসময় ৭/৮ জন সন্ত্রাসী দল হকিস্টিক, ছুরি, লাঠি নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ৩য় তলা থেকে নিচে ফেলে দিয়ে সন্ত্রাসীরা হত্যা চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত আয়ুব মিয়াজী গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা তার প্রতিষ্ঠানে উঠে কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। মারতে মারতে একসময় তিন তলা উপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তার প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি ল্যাপট্যাপ ভাঙচুর করে এবং সাথে করে নিয়েও যায়।
ভিকটিম সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজী আরো জানান, দোহাজারী পৌরসভার পূর্ব দোহাজারী এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সংবাদ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা এবং এ সম্পর্কিত সংবাদ পরিবেশন করায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন টেলিফোনে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম টেলিফোনে জানান, পূর্ব দোহাজারী এলাকায় পাহাড় কাটার বিষয়টি গত শুক্রবার তাকে অবহিত করেন সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজী। সংবাদ পাওয়ার পর ওইদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে ৪ঠা এপ্রিল মঙ্গলবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
পাহাড় কাটার বিষয়ে তিনি ডিসি অফিসে মামলা করার জন্য রির্পোট দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, পাহাড় কাটার ব্যাপারে সংবাদ অবহিত করার এই সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে কি না তিনি সেটা জানাতে না পারলেও বিষয়টি তদন্তের পর পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমে।
এদিকে, সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চন্দনাইশ প্রেস ক্লাব।
এই সব সন্ত্রাসী ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন চন্দনাইশ প্রেসক্লাব সভাপতি এড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ এরশাদসহ চন্দনাইশে কর্মরত সকল সাংবাদিকবৃন্দরা।