সুদীপ্ত হত্যায় জড়িত মাসুম, ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

চট্টলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডের প্রায় সাড়ে তিন বছরের মাথায় ২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এতে খুনের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের নাম উঠে এসেছে। খুনে সরাসরি জড়িত হিসেবে খাইরুল নূর ইসলাম ওরফে খায়ের, আমির হোসেন ওরফে বাবু, মোক্তার, জিহাদসহ ২৪ জনের নাম রয়েছে।

গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় চার্জশিটটি জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। যদিও বিষয়টি প্রকাশ পায় সোমবার বিকেলে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট গ্রহণের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সন্তোষ চাকমা বলেন, ‌‘তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও ভিডিওর ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের জবানবন্দি ও সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে   অভিযোগপত্রে ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে। আসামিদের ১৮ জনকে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয়জন এখনও পলাতক আছেন।’

তিনি আর বলেন, ‘মূলত দিদারুল আলম মাসুমের পরিকল্পনা ও নির্দেশে সুদীপ্তকে খুন করা হয়ে বলে তদন্তে স্পষ্ট উঠে এসেছে।’

২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। সুদীপ্তর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে যে হত্যা মামলা করেছিলেন, এক বছর পর তারই আবেদনে আদালত এর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়।

২০১৮ সালের ১২ জুলাই গ্রেপ্তার মিজান হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে মাসুমের নাম বলার পর গ্রেপ্তার হন মাসুমও। তিনি ছাড়াও এ মামলায় আরও ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যারা সবাই মাসুমের অনুসারি বলে পরিচয় দিয়েছেন। এদের মধ্যে চার জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, লালখান বাজার এলাকা থেকে আটটি অটোরিকশা করে দক্ষিণ নালাপাড়া গিয়েছিল হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা। পিবিআই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর সাতটি অটোরিকশা জব্দ করে। জব্দ করা হয়েছে একটি মটরসাইকেলও। এসব অটোরিকশা চালকদের মধ্যে তিন জন সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ মামলায় মাসুমের নাম আসার কিছু দিন পর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর এফ কবির মানিক। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই মাসুমের দুটি অস্ত্রের নিবন্ধন বাতিল করে আদেশ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ৩ অগাস্ট বিকালে মাসুম নিজে গিয়ে নিবন্ধন বাতিল করা তার অস্ত্রগুলো খুলশী থানায় জমা দিয়েছিলেন। পরদিন ঢাকার বনানী থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তিনি এখন জামিনে আছেন।