দেশে প্রবাসীদের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২২২৮ ডলারে উন্নীত হয়েছে : তথ্য মন্ত্রী

নগর প্রতিবেদক:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রবাসী কমিউনিটি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২ অক্টোবর) জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়ার সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে, যার সমালোচনা প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানেও হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সাড়ে ১২ বছরে বাংলাদেশের প্রবাসীদের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২২২৮ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গত কয়েকদিন ধরে বক্তৃতা করছেন সব দলের ঐক্য করে তারা সরকারের পতন ঘটাবেন। এই বুলি যখন দিচ্ছে, তখন খেলাফত মজলিস ঘোষণা করল তারা বিএনপির সাথে নাই। যেই ঐক্য আছে সেই ঐক্যই ধরে রাখতে পারে না, দলগুলো তাদেরকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত সরকার পতনের হুমকি দেয়। এই কথা বলতে বলতে আসলে তারা নিজেদেরই পতন ঘটিয়ে ফেলেছে।

তথ্য মন্ত্রী এ সময় প্রবাসীদের মধ্যে অপপ্রচার যারা করছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিতে অনুরোধ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ৭৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরাসরি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন দেশে বিমান চলাচল করা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার, যার সুফল আগামীতে প্রবাসীরা পাবে।

আলোচনা সভায় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পাকিস্তান আমলে বিদেশ যাওয়াতো দুরের কথা, একটি পাসপোর্ট পাওয়া অনেক দুরূহ ব্যাপার ছিল। বিদেশ যেতে হলে প্রথমে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম থেকে করাচি বা লাহোরে যেতে হতো, সেখান থেকে বিদেশের ফ্লাইট হতো, ঢাকা থেকে বিদেশের ফ্লাইট ছিলোনা। সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে এককোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ যদি স্বাধীন নাহতো তাহলে আমাদের পক্ষে কখনো এভাবে বিদেশ যাওয়া সম্ভব হতোনা।

এছাড়াও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে সব চ্যানেল বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে দেশে আসে, সেগুলোর সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোন বাঁধা নেই। তবে আইন মানা বিদেশী চ্যানেলের যেমন দায়িত্ব একইভাবে বিদেশী চ্যানেলগুলো যারা সম্প্রচার করে সেই ক্যাবল অপারেটরদেরও দায়িত্ব। কেউ যদি উদ্দেশ্যমূলক জনগণকে বিক্ষুদ্ধ করার জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখে তাহলেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকার এখনো কোন চ্যানেল বন্ধ করেনি। বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে যেহেতু তারা ফিড দিচ্ছে না তাই এই চ্যানেল গুলো বাংলাদেশে যারা অপারেটর তারাই সম্প্রচার বন্ধ করেছে।

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আকাশ উম্মুক্ত, এখানে যেকোন বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারে, কিন্তু অবশ্যই সেটি বাংলাদেশের আইন মেনে করতে হবে। বাংলাদেশের আইনানুযায়ি বিদেশী চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে কোন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারেনা। একই আইন ইউরোপ আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাসহ উপমহাদেশের অন্য দেশ গুলোতে আছে। সেই আইন মেনেই সেখানে ভিনদেশী চ্যানেল গুলোকে সম্প্রচার করতে হয়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে বছরের পর বছর ধরে আমাদের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিদেশী চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনসহ সম্প্রচার করছিল। আমরা বহুবার তাগাদা দিয়েছি, শেষ পর্যন্ত আমরা বিদেশী চ্যানেলের যারা এখানে প্রতিনিধি ক্যাবল অপারেটর এবং টেলিভিশন মালিকদের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পহেলা অক্টোবর থেকে আমরা আইন কার্যকর করব। সে অনুযায়ি গতকাল থেকে আমরা মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করছি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞাপনসহ চালানোর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার মত ইনভেস্টমেন্ট প্রতিবছর হয়না। সেটি থেকে দেশ বঞ্চিত হয়, মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি বঞ্চিত হয়, আমাদের সাংবাদিকরাও বঞ্চিত হয়। সেই কারণে আমরা যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি সেটিকে টিলিভিশন মালিকদের সংগঠন, সম্প্রচার জার্নালিস্ট ফোরামসহ সকলে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমরা আশা করবো বিদেশী চ্যানেলগুলো খুব সহসা বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে বাংলাদেশে ফিড পাঠাবে। তাহলে এখানে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোন বাঁধা থাকবেনা। বিবিসি, সিএনএনসহ বহু চ্যানেল আছে যেগুলো বিজ্ঞাপনবিহীনভাবে বাংলাদেশে প্রদর্শিত হচ্ছে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য আমরা নীতিমালা করছি, নীতিমালা খুব সহসা চুড়ান্ত হবে, সেই নীতিমালা যখন জারি হবে তখন সেই নীতিমালার যারা ব্যত্যয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ আবুধাবি কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, চট্টগ্রাম প্রবাসী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম এ ছালাম। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আবদুল মোতালেব, জামসেদুল আলম, শফিউল আলম, সেলিম আনছারি, জমির হোসেন জমির প্রমুখ সহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দরা।