হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ ইমপোর্ট পারমিট মেয়াদ শেষ: খাতুনগঞ্জে বেড়েছে দাম !

অর্থনীতি ডেস্ক :

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। আসছে না নতুন কোন আমদানি। কারণ, আমদানির অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এদিকে, এ আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে পাইকারি বাজারে।

জানা গেছে, চলতি মাসের ৫ মে পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য পাওয়া ইমপোর্ট পারমিটের (আইপি) মেয়াদ ছিল। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত ছয়দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। একইভাবে দেশের অন্য বন্দর দিয়েও এ সময় আমদানি আসেনি।

স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, হিলি দিয়ে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ এসেছে। এরপর বন্দর দিয়ে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্দর দিয়ে সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল ৬৮ ট্রাকে এক হাজার ৯০২ টন পেঁয়াজ এসেছে। এরপর ঈদের ছুটি শেষে ৭ মে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজ আসেনি। এদিকে ঈদের আগে বন্দরে পেঁয়াজ ১৪-১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ২০-২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জ বাজার ঘুরে জানা গেছে, ঈদের আগে ২৭ টাকায় বিক্রি করা ভারতীয় পেঁয়াজ এখন ৩৩ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে সঙ্গে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। আগে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২৩ থেকে ২৪ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৮ থেকে ২৯ টাকায়। সে হিসেবে পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ভারতীয় পেঁয়াজে ৩শ টাকা ও দেশি পেঁয়াজের বস্তায় ২৫০ টাকা বেড়েছে।

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, গত ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়। সে সময় রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সময় বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করেছিল কর্তৃপক্ষ। নতুন আমদানির অনুমোদন না মেলায় আমদানি বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ আবার তা চালু হবে সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেট কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেছেন, বর্ডারে ট্রাকের সারি পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমদানিকারকরা এলসিও খুলে রেখেছেন। কিন্তু গত মাসের ৫ তারিখে আমদানি অনুমতির (আইপি) মেয়াদ শেষ হলে সরকার নতুন করে এখনও অনুমতি দিচ্ছে না। এতে করে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা একটু আন্তরিক হলেই এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করা সম্ভব।

হিলি বন্দরের আমদানিকারক শাহরিয়ার আলম জানান, সরকার নতুন করে আমদানির অনুমোদন না দেওয়ায় বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আসছে না। আমরা ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। ঈদুল আজহায় পেঁয়াজের চাহিদা মাথায় রেখে দ্রুত আমদানির অনুমতি দিলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে জানান এই আমদানিকারক।

হিলি সীমান্তেই পেঁয়াজ আমদানি অনুমতি (আইপি) না মেলায় সরবরাহ সংকটে বাড়তে শুরু করেছে পণ্যটির দাম পাইকারি বাজারেও। চট্টগ্রামের বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বস্তাপ্রতি পেঁয়াজে ইতিমধ্যে বেড়েছে ৩শ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন করে আমদানি না হওয়ার কারণে সরবরাহ সংকটে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।