নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন চেরাগী পাহাড়ে ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র আসকার বিন তারেক ওরফে ইভান (১৮) হত্যার ঘটনায় প্রিয়ম বিশ্বাস (২৫) নামের একজন গ্রেফতার হয়েছেন।
গতকাল ২৭ এপ্রিল, বুধবার রাতে নগরীর সিআরবি সাত রাস্তার মাথা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার প্রিয়মের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাতের মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালে করা দ্রুত বিচার আইনের এ মামলা বিচারাধীন।
গ্রেফতার প্রিয়মের বাড়ি চন্দনাইশের বৈলতলী গ্রামে। এ ঘটনায় মোট দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলায় অংশ নেওয়া ৪ জনকে চিহ্নিত করেছি। সব আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া গ্রেফতার শোভন হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অপর আসামি প্রিয়মের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘটনার দিন এলাকার আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় দুই দল কিশোর তরুণের মারামারির মধ্যে গত ২২ এপ্রিল রাতে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে আজাদী গলির ভেতরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় ইভানকে। সে বিএএফ শাহীন কলেজের দ্বাদশ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিবাদমান দুটি কিশোর দলের মধ্যে একটির সদস্য ইভান জামালখান এলাকায় ছাত্রলীগকর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও কোনো কমিটিতে ছিলেন না।
ঘটনার পর রাতেই ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, তিনিও ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছিলেন।
এদিকে গ্রেফতারকৃত প্রিয়মকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে ইভান তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে চেরাগী পাহাড় আজাদী গলির ভেতরে গিয়ে গ্রেপ্তার ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় কিশোরটি ইভানকে লাথি মেরে চিৎকার শুরু করলে তার পক্ষের লোকজন এগিয়ে আসে তখন ইভানের সাথে থাকা ছেলেরা পালিয়ে যায়। তখন তারা ইভানকে ছুরিকাঘাত করে।
এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন আসকারের বাবা তারেক। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ধ্রুব (২০), প্রান্ত (২০), শ্রাবণ (২০), শচীন (২০), রুবেল (২০) ও অর্ক (২০)।
ওসি জাহেদুল কবির আরও বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ইভানের বাবার করা মামলায় প্রিয়মের নাম ছিল না। কিন্তু ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়ে প্রিয়মকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে পাওয়া ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সবার নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তার প্রিয়ম হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া কয়েকজনের মধ্যে একজন। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায়ও দেখা যায়, আসকারকে ছুরিকাঘাতের সময় ধরে রেখেছিলেন প্রিয়ম, যাতে দৌড়ে পালাতে না পারেন।
আসামি প্রিয়মকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার আসামি প্রিয়ম।