দীর্ঘ ১০বছর পর টেকনাফের শিশু আলো হত্যার রায়: ৬ জনের ফাঁসি

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে আলোচিত শিশু মুহাম্মদ আলী উল্লাহ আলো হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১০বছর পর ছয়জনকে ফাঁসি ও দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১১ মে) বিকেলে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাইল এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।শিশু আলো হত্যার ১০ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন– নওগাঁর মহাদেবপুর থানার কোদ্দ নারায়ণপুরের মৃত আফতাব আলীর ছেলে মো. সুমন আলী (২৬), ঠাকুরগাঁওয়ের নিশ্চিন্তপুরের মৃত শামছুল হকের ছেলে ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান (২৯), কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুরের মৃত আসলাম মিয়ার ছেলে মো. ইয়াকুব (৩৪), টেকনাফের গোদারবিল গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মো. ইসহাক প্রকাশ কালু (৩১), টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৮) এবং মিয়ানমারের মংডু থানার ধনচিপাড়ার মৃত আবদুর রহিমের ছেলে রোহিঙ্গা ছৈয়দুল আমিন প্রকাশ লম্বাইয়া (৪৭)।

এদের মধ্যে ইয়াছিন, ইয়াকুব, কালু কারাগারে রয়েছেন। বাকি আসামি সুমন, নজরুল, ছৈয়দুল আমিন লম্বাইয়া পলাতক।

অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, পৌনে এক ঘণ্টা রায় পড়ে শোনানোর পর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেকের ফাঁসি এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।

খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন-

টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়ার মৃত মৌলভী আবদুল জলিলের ছেলে মহিবুল্লাহ (৪৫) ও টেকনাফ পৌরসভার লেঙ্গুরবিলের জাফর আহমদের ছেলে মো. দিদার মিয়া (৩৫)।

তাদের মধ্যে মুহিবুল্লাহ জামিন নিয়ে পলাতক আর দিদার মিয়া কারাগারে আছেন।

এদিকে নিহতের বাবা মামলার বাদী আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, যারা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বা প্রকৃত আসামি, তারা খালাস পেয়েছেন। আর যারা ভাড়াটিয়া তাদের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক শাস্তি তাকে পেতেই হবে।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সেলিম উদ্দীন রাজু বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

উল্লেখ্য যে ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদার বিল এলাকার মো. আবদুল্লাহর সাত বছরের ছেলে মো. আলী উল্লাহ আলোকে বাড়ির কর্মচারী মো. সুমন আলী অপহরণ করেন। পরে অপহরণের খবর বাড়ির লোকজন জানতে পেরেছে ভেবে ভয়ে তাকে সিলিংয়ের ওপরেই জবাই করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত আলোর বাবা আবদুল্লাহ বাদী হয়ে ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পাঁচ আসামির নাম উল্লেখ করে এবং ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।