নিজস্ব প্রতিবেদক:
ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি ও নবায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের অভিযোগ আর ভোগান্তির অবসান ঘটেছে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশীদের মধ্যে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ঘোষণা করেছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মাত্র ১৫ দিনেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার নতুন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে ইতিমধ্যে। বিআরটিএ জানিয়েছে, এখন থেকে আবেদনকারীর বাড়িতেও লাইসেন্স পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যার ফলে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশীদের আর কোন প্রকার ভোগান্তি পোহাতে হবে না। সাথে দালালমুক্ত হয়েছে বিআরটিএ প্রতিষ্ঠান।
বিআরটিএ কতৃপক্ষ জানিয়েছে, পূর্বে পেশাদার লাইসেন্স পেতে পরীক্ষা নেয়ার ১৫ দিন পর দেয়া হতো পরীক্ষার ফলাফল। এরপর সাত থেকে দশদিন পর পুলিশ ভেরিফিকেশন হাতে পাবার সপ্তাহখানেক পর নেয়া হতো আঙুলের ছাপ। এরপর বছরের পর বছর ঘুরেও মিলতো না ড্রাইভিং লাইসেন্স। লাইসেন্স প্রত্যাশীদের এ ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে স্মার্ট বাংলাদেশের বাস্তবায়নে নেমেছে বিআরটিএ চট্টগ্রাম অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলায় শুরু হয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাড়িতে পৌছে দেওয়ার কার্যক্রম। এর অংশ হিসেবে একদিনে আঙুলের ছাপ ও পরীক্ষা নেয়াসহ সকল কার্যক্রম শেষ করে ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। এ লাইসেন্স আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে ডাক বিভাগ বা কোরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে।
একাধিক সেবাগ্রহীতারা জানিয়েছেন, তারা মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিআরটিএ থেকে ডিজিটাল সিস্টেমে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন এখন। যা আগে অ্যানালগ সিস্টেমে প্রায় একমাস সময় লেগে যেতো।
সেবাগ্রহীতারা আরো জানান, আগে অনেক ভোগান্তি হতো। অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে টাকা পয়সাও হারাত। এখন অনলাইনে সবকিছু হওয়ায় দালালমুক্ত হয়েছে বিআরটিএ। পাশাপাশি ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে। এতে আমরা খুশী।
চট্টগ্রাম বিআরটিএ এর উপ পরিচালক (ডিডি) তৌহিদুল হোসেন জানান, বিআরটিএ এর ৭০ শতাংশ কার্যক্রম ও সেবা অনলাইনে হচ্ছে। এতে অনিয়ম ও দূর্ণীতির সুযোগ নেই। তিনি জানান, এখন থেকে হয়রানি ছাড়াই গ্রাহকরা তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাচ্ছেন। টেস্ট দেওয়ার পর ওইদিনই ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হচ্ছে। যদি টেস্টে পাস করেন, পরবর্তীতে ফি জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছেন। গ্রাহককে আর বিআরটিএ অফিসেও আসতে হচ্ছে না।
বিআরটিএ কতৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একটি দালালচক্র দীর্ঘদিন ধরে বিআরটিএ কেন্দ্রিক সক্রিয় ছিল। তারা গ্রাহকদের নানাভাবে প্রতারিত করে আসছিল। কয়েকজন শ্রমিক নেতা নামধারী এ প্রতারকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হলেও তাদের অপতৎপরতা বন্ধ নেই। নানা কৌশলে চক্রটি বিআরটিএ এর সেবা কার্যক্রমকে বির্তরকিত করতে চেস্টা চালাচ্ছে।পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অনলাইনে আবেদন করলেই মোবাইলে ফিরতি বার্তা পাবেন গ্রাহকরা। আর সেটা দেখেই সড়কে পরীক্ষা করা যাবে কে লাইসেন্সের আবেদন করেছেন, কে করেননি। এতে আইনগতভাবে যান চলাচলে ভোগান্তি হবে না বলে উল্লেখ করেন।