সুর পাল্টাচ্ছে তালেবান !নারীদের পড়াশোনা-কাজের সুযোগ দেয়ার আশ্বাস বদলাচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আফগানিস্তানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কাজ করার অনুমতি দেয়া উচিত হবে না বলে জানালেন তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ নেতা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

এদিকে, পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবান ২০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটির নারীদের অধিকার নিয়ে চিন্তিত ছিল পুরো বিশ্ব।

নারীদের পড়াশোনা আর কাজের সুযোগ দেয়া হবে এমন আশ্বাস দিলেও, ধীরে ধীরে সুর পাল্টাচ্ছে তালেবান।

নারী-পুরুষ সহশিক্ষা নিষিদ্ধ করার পর এবার নারীদের পুরুষের পাশাপাশি কাজের সুযোগ দেয়া উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি।

রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠায় আমরা প্রায় ৪০ বছর ধরে লড়াই করে আসছি। পরিবারের বাইরে নারী পুরুষ একসাথে থাকা, এক ছাদের নিচে বসা শরিয়তে নেই। নারী আর পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে না, এটা স্পষ্ট। নারীরা আমাদের অফিসগুলোতে আসতে পারবে না এবং আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজ করতে পারবে না”।

এক্ষেত্রে সরকারি অফিস, ব্যাংক, মিডিয়াসহ অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের কাজের সুযোগ থাকবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নারীদের অধিকার দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করেই এমন মন্তব্য করলেন তিনি।তালেবানের অতীতের কট্টর নীতি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশটির সরকারি অফিস, ব্যাংক, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের চাকরির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা এএফপি।গত ১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে চলে যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তালেবান নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। তালেবানের এই সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারী সদস্য নেই।

এ নিয়ে আফগান নারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে তালেবানের দমন–পীড়নমূলক আচরণের শিকার হন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ব্যাপারে তাদের হতাশা ব্যক্ত করে।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে পুরুষের লিখিত অনুমতি ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। সেই অনুমতি থাকলেও তাদের বের হতে হত সর্বাঙ্গ ঢাকা বোরখা পরে। বয়ঃপ্রাপ্ত হলেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ, নারীদের চাকরি করারও সুযোগ ছিল না।

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তাদের অধীনে নারীদের ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ, আতঙ্ক। যদিও ক্ষমতা নেয়ার পর তালেবান নারীদের অধিকারের বিষয়টি ঠিক রাখবে বলে জানিয়েছিলোএদিকে আফগান নারীদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে তালেবানকে আহ্বান জানিয়েছে কাতার। সেইসাথে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার ভাবনার সময় এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শুরু থেকে তালেবান বলে আসছে, কোন হত্যাযজ্ঞে যাবে না তারা। কিন্তু আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেসামরিক লোকজন হত্যার খবর আসছে।

সবশেষ পাঞ্জশির উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিক হত্যার খবর দিয়েছে বিবিসি।

গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায় ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তিকে তালেবান যোদ্ধারা গুলি করে হত্যা করছে। তবে ইউনিফর্ম পরা ব্যক্তি আফগান সেনা নাকি বেসামরিক নাগরিক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।এদিকে, আবারো আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে সাফাই গাইলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।