বিনোদন ডেস্ক:
কেরানীগঞ্জ থেকে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের নিচ থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সালাম মিয়া সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ থেকে রাইমা ইসলাম শিমুর নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়িকা সাদিয়া মির্জা বলেন, কেরানীগঞ্জ থানার ওসি জানিয়েছেন শিমু আপার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। শিমু আপা রোববার সকাল ১০টা থেকে আজ পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন।
তিনি রোববার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। বর্তমানে তার মরদেহ ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন তার ভাই খোকন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সালাম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রমজানুল ইসলাম জানান, পরিবারের লোকজন তার মরদেহ শনাক্ত করেছেন। নিহত নারী একজন চিত্রনায়িকা ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে দুষ্কৃতিকারীরা তাকে হত্যা করে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে ফেলে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে নিহতের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন জানান, দুই সন্তান ও স্বামী সাখাওয়াত হোসেন নোবেলকে নিয়ে শিমু রাজধানীর গ্রিনরোড স্টাফ কোয়ার্টারের পাশে ৩৪ নম্বর বাসায় থাকতেন। রোববার সকালে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে নিখোঁজ হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে কলাবাগান থানায় একটি জিডি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার বোন চিত্রনায়িকা ছিলেন। অনেক সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। পরে শিল্পী সমিতি থেকে তার নাম বাতিল করে দেওয়া হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেটা পুলিশ খুঁজে বের করবে।
এ ঘটনায় রাতে কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) সাকিব আহমেদ বলেন, এক নারীর নিখোঁজের বিষয়ে তার পরিবার থানায় একটি জিডি করেছিলেন। পরে জানতে পেরেছি নিখোঁজ নারীর মরদেহ কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
চিত্রনায়িকা শিমু
মিটফোর্ড হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ সন্ধ্যায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে পাঠিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার তার ময়নাতদন্ত করা হবে।
শিমু ছিলেন রাজধানীর গ্রিনরোডের বাসিন্দা। কলাবাগান থানা পুলিশ জানায়, রবিবার (১৬ জানুয়ারি) অভিনেত্রী শিমুর অভিভাবকরা নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে জিডি অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার কেরানীগঞ্জ থেকে বস্তাবন্দি একটি লাশ উদ্ধার করে। শিমুর অভিভাবকদের জানানোর পর তারা লাশটিকে শনাক্ত করে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসাপাতালে আছে।
১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫ সিনেমায় অভিনয় করেন শিমু। তিনি কাজী হায়াতের ‘বর্তমান’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। পরে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের সিনেমায় কাজ করেন।
গত দুই বছর ধরে এফডিসি যাতায়াত ছিল শিমুর। শিল্পী সমিতি কর্তৃক ১৮৪ জন ভোটাধিকার হারানো শিল্পীর মধ্যে ছিলেন। ভোটাধিকার রক্ষার বিভিন্ন আন্দোলনে তাকে এফডিসিতে পাওয়া যেত।
কয়েকবছর ধরে একটি বেসরকারি টিভির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন শিমু। টুকটাক নাটকে কাজ করতেন। পাশাপাশি তার নিজের নাটক নির্মাণের প্রোডাকশন হাউজ ছিল বলে জানা যায়।