নিউজ ডেস্ক :
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আজ ৩১ মে। তামাক চাষ, তামাকজাত পণ্য উৎপাদন, ব্যবহার ও তামাকের বর্জ্য পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর সে বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর ৩১ মে দিবসটি পালন করা হয় ।
এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘টোব্যাকো: থ্রেট টু আওয়ার এনভায়রনমেন্ট’ অর্থাৎ তামাক: পরিবেশের জন্য হুমকি। আর বাংলাদেশে ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হতে যাচ্ছে দিবসটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। বিশ্বজুড়ে তামাক সেবনের সমস্ত প্রক্রিয়া থেকে বিরত রাখতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দিবসটি প্রচলিত হয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করে। তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি, ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী দেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।বাংলাদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাপক।
বিশ্বের ৯০ ভাগ তামাক উৎপাদন হয় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। আর বিশ্বের মোট তামাকের ১.৩ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। আবাদযোগ্য জমিতে তামাক চাষের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে।
টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বন-নিধনের জন্য তামাক দায়ী। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে জলাশয়ে মিশে ক্ষতিগ্রস্ত করছে দেশের মৎস্য উৎপাদন। দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী ইতোমধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে।
এছাড়াও বাংলাদেশেও সিগারেটের ফেলে দেয়া ফিল্টার পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মোট ৭১ বিলিয়ন সিগারেট শলাকা উৎপাদিত হয়েছে। সিগারেটের ফেলে দেয়া ফিল্টার প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় এক দশক সময় নেয়, আর মিশে যাওয়ার সময় এ থেকে সাত হাজারেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়।
কেবল সিগারেটই নয়, জর্দা, গুলের মতো ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যগুলোও প্লাস্টিক কৌটা ও পলিথিন প্যাকেটে ভরে বিক্রি করা হয়- যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।