মিয়া ভাই খ্যাত কিংবদন্তি চিত্রনায়ক ফারুক’র ইন্তেকাল

বিনোদন ডেস্ক:

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উজ্জল নক্ষত্র মিয়া ভাই খ্যাত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান দুলু ফারুক ইন্তেকাল করেছেন।

“ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে শরৎ। তিনি সিঙ্গাপুর থেকে জানান, আজ সোমবার (১৫ যে) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে আব্বু মারা গেছেন। আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি ১৮ আগস্ট ১৯৪৮ সালে তত্কালীন পূর্ব বাংলার মানিকগঞ্জের ঘিওর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তরুণ বয়স থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর সহধর্মিণী নাম ফারজানা পাঠান। ফারুক ফারজানা পাঠানকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কন্যা ফারিহা তাবাসসুম পাঠান ও পুত্র রওশন হোসেন।

পরিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ২০১২ সালের জুলাইয়ে নায়ক ফারুক এক মাস ধরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ফারুক দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৩ সালের ৩০শে আগস্ট সিঙ্গাপুরে যান ও সেখানকার মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে ভর্তি হন। চিকিৎসা শেষে ২০১৪ সালের ৭ই জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভীষণ জ্বর নিয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০২১ সালের ১৫ই মার্চ খিচুনি হওয়ার পরে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ১৮ মার্চ অবস্থার উন্নতি হলেও ২১ মার্চ আবার অচেতন হলে আইসিইউতে নেয়া হয়।

গুণী এই অভিনেতার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে সারেং বৌ, লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, মিয়া ভাই, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে ইত্যাদি। এক জীবনে তিনি ৬৪ টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে প্রায় দুই বছর চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় আসেন নায়ক ফারুক।

লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।