মিস্টার বিন… নামটি বলার পরে আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কোনো দরকার পড়ে না। টেলিভিশনের পর্দায় কৌতুক অভিনয় দিয়ে জয় করেছেন ভক্তদের হৃদয়। মি. বিন মানেই এক পশলা হাসির ঝলক। কিন্তু এই চরিত্রের অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসন বেজায় বিরক্ত।
মিষ্টার বিন চরিত্র দিয়ে দর্শককে আনন্দ দিলেও নিজের কাছে এটি ছিল চরম বিরক্তিকর ও একঘেয়ে একটি বিষয়। ব্রিটিশ এই অভিনেতা যখন মিস্টার বিন হয়ে ওঠেন, তখন তিনি স্নাতকোত্তরে পড়ছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায় রোয়ান
অ্যাটকিনসন অভিনীত জেমস বন্ড সিরিজের ছবি ‘নেভার সে নেভার এগিন’ চলচ্চিত্র।
রোয়ান অ্যাটকিনসন গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিই রোয়ান অ্যাটকিনসন অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। এরপরের বছর রোয়ান অ্যাটকিনসন অভিনয় করেন ‘ডেড অন টাইম’মুভিটিতে। ১৯৯০ সালে প্রথম তিনি মিস্টার বিন হিসেবে আসেন ছোট পর্দায়। এই শো প্রথম প্রচারিত হয় ১৯৯০ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৫টি পর্বে প্রচারিত হয়েছিল এটি। সিরিজটি সারা বিশ্বের ২৪৫টি এলাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পাশাপাশি সিরিজটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অ্যানিমেটেড সিরিজও বানানো হয়েছে। বানানো হয়েছেদুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।৬৫ বছর বয়স্ক এই অভিনেতা এখন অ্যানিমেশন ছবি ‘মিষ্টার বিন’–এর কাজে ব্যস্ত। তিনি জানান, মি. বিন চরিত্রটি করতে তিনি কখনোই আনন্দ পাননি। তা ছাড়া চরিত্রটি করতে প্রচুর দায়িত্বশীল আচরণও করতে হয়েছে তাঁকে। রোয়ান অ্যাটকিনসন বলেন, ‘আমি চরিত্রটি (মিস্টার বিন) তৈরি করতে খুব একটা আনন্দ পাইনি। আমার কাছে খুবই চাপ ও একঘেয়ে মনে হয়েছে।
আমি চাইছিলাম কবে এটি শেষ হয়ে যাবে।’ বেশ কয়েক বছর আগে ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিন চরিত্রে আর হাজির না হওয়ার ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এই চরিত্রটি দিনে দিনে তাকে শিশুতে রূপান্তর করে দিচ্ছে। এই চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য যে শারীরিক শক্তির প্রয়োজন হয়, সেটিও আজকাল আর তিনি পাচ্ছেন না। এ ছাড়া তাঁর মতে, ‘একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিকে শিশুসুলভ অভিনয় করাটা একেবারেই বেমানান। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে আমি সিরিয়াসধর্মী চরিত্রগুলোতেই শুধু অভিনয় করব।’ মিস্টার বিনের এমন জনপ্রিয়তায় এতটুকুও বিস্মিত হননি রোয়ান অ্যাটকিনসন। তাঁর মতে, একজন বয়স্ক মানুষকে দিয়ে শিশুদের মতো আচরণ করে কৌতুক তৈরি করা আগাগোড়াই একটা মজার বিষয়। ফলে এটি আন্তর্জাতিকভাবে সফল হয়েছে। ২০০৫ সালের রম্য দর্শকদের ভোটে ব্রিটিশ কমেডি ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ৫০ কমেডিয়ানের তালিকায় নাম ওঠে রোয়ানের। ইংল্যান্ডের রাজনীতি এবং রাজপরিবারে রোয়ানের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। রাজপরিবারের বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ডারহামের ক্যাথেড্রাল স্কুলে রোয়ানের সঙ্গী ছিলেন টনি ব্লেয়ার- যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।