খুলশী খুনের ঘটনায় নির্মাণাধীন ভবনের দাড়োয়ান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নগরের খুলশীতে নির্মাণাধীন সাত তলা ভবনের মালিককে হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত দারোয়ান মো. হাছানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে লালদিঘী জলসা মার্কেটের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

বিষয়টি খুলশী থানার ওসি নিশ্চিত করে জানান ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় উপ-পুলিশ কমিশনারের (উত্তর) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভবন মালিককে খুনের দায় স্বীকার করেছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ভবনের ইট বালি সাপ্লাইয়ের কাজের জন্য দারোয়ান হাছান নানা সময়ে ভবন মালিককে চাপ দিতেন। সে নিজে কাজ না পেয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ডাবের সাথে নেশা জাতীয় কিছু খাওয়ান নিজ রুমে ভবন মালিক নেজাম পাশাকে। পরে তিনি নিস্তেজ হয়ে গেলে তার হাত পা বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে নেজাম পাশাাকে খুন করে দারোয়ান হাছান। পরে রাতের কোনও এক  সময়ে বাড়ির অদূরে রাস্তায় মরদেহ ফেলে আসে। এরপর থেকে সে পালিয়ে লালদীঘির পাড়ে আত্মগোপনে থাকে। দুই দিনের মাথায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। 

এর আগে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) খুলশী থানায় নিহত নেজাম পাশার স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ভবনের দারোয়ান হাছানের (৪২) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

এজহার সূত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন ভবনের দেখাশোনার জন্য মো. হাছানকে দারোয়ান হিসেবে নিয়োজিত করা হয়। হাছান তার সুবিধাভোগী লোকজনকে নির্মাণাধীন ওই ভবনে বিভিন্ন কাজ দেওয়ার জন্য নিহত ভবন মালিক নেজাম পাশাকে প্রায় সময় জোরাজোরি করতো। এ নিয়ে তার সঙ্গে ভবন মালিকের মনোমালিন্য হয়। ফলে তাকে চাকরিচ্যুত করবে বলে জানায় ভবন মালিক। এতে ক্ষিপ্ত হয় দারোয়ান হাসান। 

গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার দিকে নিহত ভবন মালিক তার গ্রামের বাড়ি থেকে খুলশীর জালালাবাদের ভিআইপি রাতে নির্মানাধীন ভবনের তদারকির কাজে যান। এসময় তার সাথে হাছান ছিল। কিন্তু রাত প্রায় ১১ টার দিকে ভবন মালিকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে মেয়েকে ফোনে জানানো হয়— তিনি ভবনে আসেনি। নির্মাণ ভবনের বিভিন্ন মালামাল তিনি লোক মারফতে পাঠিয়েছেন। মেয়ে বাবার মোবাইল তার কাছে কেন জানতে চাইলে দারোয়ান হাছান জানায়, মোবাইলটি লোক মারফতে তার কাছে পাঠিয়ে নির্মাণ কাজে কেনা মালামালের জন্য ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেছেন। দারোয়ানের এসব কথা শুনে সন্দেহ হওয়ায় দ্রুত আত্মীয় স্বজনরা ঘটনাস্থলে আসেন। 

রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। সোমবার ভোরে নির্মাণাধীন ভবনের পাশে একটি প্লটের সামনের দেওয়াল ঘেঁষা পরিত্যক্ত পলিথিন, কাঁদা বালি, ময়লার স্তুপের ভিতরে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় নেজাম পাশার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।