অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে থাকা সেই বাবার লাশ দাফন! শেষ হয়নি সন্তানদের দ্বন্দ্ব!

আনোয়ারা প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামে অবসরের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবার লাশ দাফন আটকে রেখেছিলেন সন্তানরা। সেই বিবাদ মিটিয়ে দুদিন পর মনির আহমদের (৬৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ছেলেরা বাবার লাশ দাফন করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা উপস্থিত থাকলেও মনির আহমদের তিন মেয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

মনিরের লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ১৭ হাজার ৫০০ টাকাও ইউপি চেয়ারম্যান পরিশোধ করেন।

গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত পদ্মা অয়েলের কর্মকর্তা মো. মনির আহমদের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর পেনশনের ৫০ লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এ নিয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত বাড়ির এক পাশে অ্যাম্বুলেন্সেই পড়ে ছিল মনিরের মরদেহ। পরে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এরপর বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলমের হস্তক্ষেপে ও কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদের সহযোগিতায় লাশ দাফন করা হয়। তবে লাশ দাফনের আগের রাতেই তিন মেয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যান বলে অভিযোগ করেন মনিরের স্ত্রী দিলোয়ারা বেগম।

বড়উঠান ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, ‘টাকা-পয়সা, সম্পদের চেয়ে মানবতা বড়। তাই আমি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পরিশোধ করে মনিরের স্ত্রী-সন্তান এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে মরদেহ দাফন করেছি। টাকা ও সম্পদের বিষয়টি পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে আইনগতভাবে সমাধান করা হবে।

’মনিরের স্ত্রী দিলোয়ারা বেগম বলেন, ‘মেয়েরা প্রতারণা করেছে। তারা আমাকে ফাঁকি দিয়ে তাদের অসুস্থ বাবাকে ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে টাকা নিল। এখন তারা মরদেহ ফেলে রাতে পালিয়ে গেছে।’কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।

তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং মৃত ব্যক্তির স্বজনদের উপস্থিতিতে সমঝোতার মাধ্যমে সোমবার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি থেকে অবসর নেওয়ার পর ক্যানসারের কাছে হার মেনে গত শনিবার বিকেলে মারা যান মনির আহমদ। কিন্তু তার অবসর ভাতার ৫০ লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে সন্তানরা লাশ দাফন আটকে রাখেন।