ডেস্ক রিপোর্ট :
বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী তার ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এফ রহমান হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জড়িতদের শাস্তি দেওয়ার আকুতি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে মুক্তিযোদ্ধারা যখন নানাভাবে সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন সেখানে বাঁশখালীর মুক্তিযোদ্ধারা অসহায় দিনযাপন করছেন।
সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। যার নমুনা গত ১৮ জানুয়ারি আপনারা দেখেছেন ও জেনেছেন। আমি একটি দাওয়াতে থাকাকালীন সময়ে কিভাবে আমাকে পেটানো হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমার বয়স এখন ৭৫।
গত ১৮ জানুয়ারি আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। সেদিন আমার ওপর কারা হামলা চালিয়েছে তা আপনাদের অজানা নয়। তবুও আমি ভিডিও চিত্রে থাকা প্রমাণস্বরূপ কিছু বিষয় উপস্থাপন করছি।
সেদিন হামলাকারীরা একজন মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, আমাকে প্রাণে মারতে না পেরে সেদিনের ঘটনার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমার চরিত্রহননের প্রয়াস চালিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, সেদিন আমি ও পৌর যুবলীগ আহ্বায়ক হামিদ উল্লাহ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হীরা মনির বাসায় সোফায় বসে নাস্তা করছিলাম। এসময় বাইরে থেকে কয়েকজন ব্যক্তি দরজা তালাবদ্ধ করে দেন। পরে সংঘবদ্ধ হয়ে ঘরে ঢুকে সিরাজ বলতে থাকে, এমপিকে গালি দিয়ে এখানে কি? আপনি এমপির বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলেছেন।
এসময় ইলিয়াছ বলেন, ‘আপনি নৌকার বিরুদ্ধে, মোবাইল মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এসময় আমি এমপিকে গালি দিইনি বলে জানাই। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা হামিদ উল্লাহ হামলাকারীদের শান্ত করতে চাইলে তারা হামিদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি এমপির লোক। তুমি এখানে আসতে পারবে। কিন্তু মেয়র আসতে পারবে না’।
আমি এমপিকে ফোন দিতে বললে ইলিয়াছ বলেন, আমি এমপির সাথে কথা বলেছি। উত্তেজিত অবস্থায় সিরাজ, মিনার ও ইলিয়াছ মিলে শার্টের কলার ধরে আমাকে সোফায় বসা অবস্থা থেকে টেনে হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে মারধর করতে থাকে। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দেয়।
তিনি বলেন, বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী আগে থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ক্ষুব্ধ। তিনি বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধারা তার ডাকে সাড়া দেন না। নানান কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এমপির দূরত্ব আছে। এমপি প্রায় সময় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ওপর হামলা করতে অনুসারীদের উৎসাহ দেন। যার কারণে গত দুই বছরে এমপির কোনও অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন না।
সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি এমপির লোকজন আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। সিরাজ, মিনার ও ইলিয়াছ এমপির লোক হিসেবে পরিচিত। ঘটনার পর থেকে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলেছে এমপির লোকজন। আওয়ামী লীগের লোকজন তার সঙ্গে নেই। তাই তিনি নিজস্ব বাহিনী ও জামায়াত-বিএনপির লোক দিয়ে সংগঠন চালাচ্ছেন। এমপি বাঁশখালীতে একক রাজত্ব কায়েম করতে চান। সে কারণে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলার সহকারী কমান্ডার (অর্থ) আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম নগরের আহ্বায়ক শাহেদ মুরাদ শাকু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাবেল।