কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে ভূমিকা রাখছে জিনিয়াস: শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল

নিজস্ব প্রতিবেদক :

জিনিয়াস মেধাবৃত্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল বলেছেন, ‘শিক্ষা ছাড়া প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকা যাবে না। তাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সূদুর প্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

শনিবার (২১ মে) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরের রীমা কমিউনিটি সেন্টারে জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধাবৃত্তি পুরস্কার বিতরণ ও শিশু উৎসবে ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কৃর্তি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা বড় হও, মানুষ হও, মানবিক হও, মহৎ হও। বঞ্চিত, নিরন্ন, অভাবী মানুষকে বুকে ঠাঁই দিয়ে এই দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোল। আমার বিশ্বাস তোমাদের হাত ধরেই এই দেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে। বিশ্বের দরবারে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে অমিত সম্ভাবনার এই মাতৃভূমি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যেকোন সামাজিক সংগঠন ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ তথা সমাজের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে তা সফল হতে বাধ্য। বিগত ৯ বছর ধরে জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের মেধাচর্চার যে ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। যেকোন মূল্যে এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জিনিয়াস সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ রইলো।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ‘আজকের মেধাবী শিশুরাই এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে শুধু শিক্ষা অর্জন করলেই হবেনা। মানুষকে ভালবাসতে হবে। শুধু দেশের মানুষকে নয়, বিশ্বের সকল নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষকে ভালবাসতে হবে। এ জন্য আগামী দিনের কর্ণধার যারা তাদের মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জিনিয়াস শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে যে ভূমিকা রাখছে তা প্রশংসার দাবিদার।’

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম আর আজিম বলেন, ‘সার্টিফিকেট অর্জন করা সহজ কিন্তু প্রকৃত মানুষ হওয়া অনেকটা কঠিন। শারিরীক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে যারা প্রকৃত মানুষ হবে তারাই দেশের সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে। আগামীতে জিনিয়াসের কার্যক্রম আরও বেগবান করা হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউনিটি এক্সেসরিজ (প্রা.) লি. এর পরিচালক মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘একটি দেশ এগিয়ে যায় শুধু শিক্ষার জোরে। ইউরোপ আজ সারা বিশ্ব শাসন করছে শুধু শিক্ষার জোরে। আমিও বলতে চাই, তোমরা শিক্ষার আলোয় এই দেশকে ভরিয়ে তোল। তোমাদের মধ্যে এদেশের ভবিষ্যত নিহিত।’

ইতিহাস গবেষক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশকে ক্ষুদা ও দারিদ্র্য্যমুক্ত, কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে উন্নীত করতে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। নীতির প্রশ্নে অটুট থেকে আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করে আলোকিত মানুষ হয়ে আলোকিত সমাজ ও দেশ গড়তে ভূমিকা পালন করতে হবে।

’জিনিয়াস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লায়ন রফিকুল ইসলামের সভাপতিতে সমুদ্র টিটু ও বিলকিছ আকতারের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সরোজ আহমেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস গবেষক ও লেখক জামাল উদ্দিন, জিনিয়াস ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন বিপ্লব মিত্র, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য লায়ন আফসার হোছাইন চৌধুরী, লায়ন অনুপ কুমার রায়, মো. গিয়াস উদ্দিন, সমর কুমার দে প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে জিনিয়াস সদস্য সচিব মিয়া এমএ করিম, যুগ্মসচিব সুশান্ত কুমার শীল, নাট্যশিল্পী মীর জুবেদ, পারভিন আকতার, ইরতেজাউর রহমান রহমান খান, তানজিম আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রায় একশ’ স্কুলের কে জি থেকে পঞ্চম শ্রেণির চার শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে সনদ, ক্রেস্ট, ব্যাগ ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন অতিথিরা।