প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, বোধন সম্মেলন শুধু কারও একার সম্মেলন নয়, এটি সব সাংস্কৃতিক সংগঠনকে একত্রিত করার একটি পরিবেশ তৈরি করেছে। বোধন দীর্ঘদিন ধরে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সংস্কৃতির সুস্থ বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে।
বোধনের হাত ধরে আমাদের নতুন প্রজন্ম সামাজিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম নিয়ে মানুষকে আলোকিত করবে। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরিতে বোধনের সবচেয়ে উচ্চতার জায়গা এটি।আমি সারাদেশে বোধনের কথা জানাব, তারা যে উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে তা আমি জানাতে চাই।
‘জাগিয়ে দে’রে চমক মেরে আছে যারা অর্ধচেতন’ শিরোনামে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলন উৎসর্গ করা হয়েছে বোধনের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিশংকর চক্রবর্তী, উপদেষ্টা মফিজুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মৃণাল সরকার, সভাপতি ও অধ্যক্ষ রণজিৎ রক্ষিত এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পঞ্চানন চৌধুরীকে।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং বোধনের পতাকা উত্তোলন করেন বোধন সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ।উদ্বোধনের পর বোধন সদস্যরা বৃন্দ আবৃত্তি ‘জাগিয়ে দেরে চমক মেরে’ পরিবেশন করে। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আব্দুল হালিম দোভাষ এবং সঞ্চালনা করেন বোধনের সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, বোধন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সংগঠন। আবৃত্তিকাররা তাদের দৃঢ় কণ্ঠে আমাদের সোচ্চার করেন, এক্ষেত্রে বোধন অগ্রগামী।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মানজারুল মান্নান এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবুসহ দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।
মানজারুল মান্নান বলেন, গণজাগরণ সৃষ্টিকারী সংগঠন বোধন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণের জন্য যেসব সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে বোধন অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে।সাইফুল আলম বাবু বোধনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। এই যাত্রাপথের অন্যতম সারথি বোধন, বোধনের সাফল্য কামনা করছি।
বোধনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলার মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস, পীযূষ বিশ্বাস, বোধনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বিশ্বজিৎ দাস ভুলু, নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি কামরুল হাসান বাদল, উদীচী চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক শিলা দাশগুপ্তা, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি মণ্ডলীর সাবেক সদস্য সুচরিত দাশ খোকন, কবিতাশ্রম ঢাকার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সবুজ ও লায়ন জাহাঙ্গীর মিঞা।উপস্থিত ছিলেন বোধনের অন্যতম সুহৃদ দীপ্তি রক্ষিত, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুস্বপন বিশ্বাস, দেওয়ান মাকসুদ, অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া, সম্মিলিত আবৃত্তি জোট চট্টগ্রামের সভাপতি ফারুক তাহের, নাট্যজন শেখ শওকত ইকবাল, মোহাম্মদ আলী টিটু, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, বনকুসুম বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট প্রণব মজুমদার, পার্থ প্রতিম বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে শিশু বিভাগের বৃন্দ আবৃত্তি ‘ছড়ানো ছিটানো ছড়া’ এবং বড়দের বিভাগের বৃন্দ আবৃত্তি ‘শিকলভাঙার গান’ পরিবেশিত হয়। বোধন সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
বিকাল ৩টায় কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলনের আহবায়ক সুদীপ বড়ুয়া খোকন। সম্মেলনের সদস্যসচিব পিউ সরকারের সঞ্চালনায় এ অধিবেশনে গত তিন বছরের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরী। অধিবেশনে বক্তব্য দেন পারভেজ চৌধুরী, বোধন সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ, সাইফুল আলম বাবু, প্রশান্ত চক্রবর্তী।কাউন্সিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক রীতা দত্ত। এছাড়াও সহকারী নির্বাচনী কমিশনার ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি পিনাকী দাশ এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু। এ সময় কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাহী পরিষদ নির্বাচন করা হয়।
নব নির্বাচিত নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা হলেন সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ণ প্রসাদ বিশ্বাস, শিমুল নন্দী, সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরী, সহ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আজম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক তৈয়বা জহির আরশি, অর্থ সম্পাদক সৌরভ দে, অনুষ্ঠান সম্পাদক জাভেদ হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দপ্তর সম্পাদক নন্দিতা দাশ, নির্বাহী সদস্য চৌধুরী নামানুল ইসলাম (পারভেজ চৌধুরী), নির্বাহী সদস্য প্রশান্ত চক্রবর্তী, কুমার প্রীতিশ বল, সুজিত রায় ও সুদীপ বড়ুয়া খোকন।