নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি কমানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ থেকে তৌহিদ হোসেন (৩০) নামে রোগীর এক স্বজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনের সড়ক অবরোধ করেন তারা। সেখান থেকেই রোগীর ওই স্বজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ বলছে সড়কের ওপর থেকে সরে গিয়ে আন্দোলন করার অনুরোধ জানালে পুলিশের ওপর চড়াও হন ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাই পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান জানান, ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোগীরা রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করছিল। তারা দুইদিকের যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে আমাদের তরফ থেকে রাস্তার একপাশ থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করা হলে একজন পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি থানায় আছেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার কারণে মামলা করা হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চমেকের এক কর্মকর্তা বলেন, সড়ক অবরোধ করার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ রোগীদের ওপর চড়াও হয় ও সামনে থাকা কয়েকজনকে মারধর করে। এ কারণে কয়েকজন রোগী আহতও হন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান জানান, আসলে রোগীদের নামে বহিরাগত লোকজনেরা এ আন্দোলনে নেমেছে। পেছন থেকে কেউ তাদের উস্কানি দিচ্ছে। কারণ তাদেরকে গতকালই বলা হয়েছে আপাতত সরকারি রেটেই ডায়ালাইসিস সেবাটা তারা পাবে। এরপরও কেন তারা সড়ক অবরোধে নামে এ ব্যাপারটা বুঝে আসে না। রোগীরা আমাকে জানিয়েছে তারা আন্দোলনে নামেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বহিরাগত এটা জানি। কিন্তু কারা তা বলতে পারবো না। হয়তো পলিটিক্যালি হতে পারে। তবে আমাদের রোগীরা বিক্ষোভ করেনি।’
প্রসঙ্গত, পিপিপি’র (পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে আসছে চমেক হাসপাতালে। আগে সরকারিভাবে প্রতি সেশনে ৫১০ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৭৯৫ টাকা করে ডায়ালাইসিস করা হতো। কিন্তু প্রতি বছর চুক্তি অনুযায়ী ৫ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ডায়ালাইসিস ফি দাঁড়িয়েছে সরকারিভাবে ৫৩৫ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৯৩৫ টাকা। এ কারণেই রোগীরা ফি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামে।