চট্টলা ডেস্কঃ মহামারি করোনাভাইরাস সংকটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৬ জন খামারি পেলেন ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা আর্থিক প্রণোদনা।বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (ভার্চুয়ালি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
স্বাগত বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা সংকটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তায় বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তথা দানাদার খাদ্য, টিকা, ওষুধ, কৃমিনাশক, সার, উন্নত জাতের ঘাসের কাটিং, গরু/মুরগির বাচ্চা, শেড নির্মাণ, মাছের পোনা, মাছের রেনু, গলদা পিএল, মাছের পিলেট খাদ্য, খৈল, চুন, সার এবং ভিজিএফ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের নগদ আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা নেয়া হয়।
প্রথম পর্যায়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৬ জন খামারিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মোট ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন এবং মৎস্য অধিদফতরের ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্প দুটির ইমার্জেন্সি ফান্ড রিলিজ কার্যক্রমের আওতায় এ আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ৪৬৬টি উপজেলা থেকে যাচাই করে প্রাণিসম্পদ খাতের ৪ লাখ ৭ হাজার ৪০২ জন খামারিকে (ডেইরি, লেয়ার মুরগী, পোল্ট্রি মুরগি, সোনালি মুরগি, ব্রয়লার মুরগি ও হাঁস খামারি) ১৫টি ক্যাটাগরিতে ৪৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ৭৫টি উপজেলা থেকে যাচাই করে মৎস্য খাতের ৭৮ হাজার ৭৪ জন খামারিকে (মৎস্য চাষি, চিংড়ি চাষি ও কাঁকড়া/কুঁচিয়া সংগ্রাহক) সাতটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ১০০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের মধ্যে ৩ লাখ ১ হাজার ৩৫৩ জন ডেইরি খামারি, ৯৭ হাজার ৮২৩ জন মুরগি খামারি এবং ৮ হাজার ২২৬ জন হাঁস খামারিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে দেশের মোট ডেইরি খামারির ৩০ শতাংশ এবং পোল্ট্রি খামারির প্রায় ৮০ শতাংশকে সরকারের এ আর্থিক সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষতিগ্রস্ত একজন খামারি সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৩৭৫ টাকা পেয়েছেন। অপরদিকে মৎস্য খাতের ক্ষতিগ্রস্থ একজন খামারিকে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে। প্রণোদনার অর্থ খামারিদের তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি নগদ, বিকাশ ও ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অবশিষ্ট ২ লাখ খামারিকে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী ধাপে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।