নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে দেশে ফের লকডাউন, আসন্ন বইমেলা স্থগিত, একদিন ঈদের ছুটিসহ ১২ দফা সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা, যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা যেমন— বিসিএস, এসএসসি, এইচএসসিসহ অন্যান্য পরীক্ষা বন্ধ রাখার বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর মনে করছে, এই বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা গেলে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের মিনি কনফারেন্স রুমে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, অধিদফতরের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গতকাল (মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ) আমরা আলোচনা সভা করেছি। আলোচনায় দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছে, আলোচিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা গেলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, আলোচনার বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ও কারিগরি কমিটির সঙ্গেও আলোচনা করব। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
১২ দফা সুপারিশ হলো—
► সম্ভব হলে কমপ্লিট লকডাউনে যেতে হবে। সম্ভব না হলে ইকোনমিক ব্যালান্স রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করতে হবে।
► কাঁচা বাজার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, শপিংমল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পবিত্র রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে।
► শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেগুলো বন্ধ আছে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। অন্যান্য কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে।
► যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসমি, এইচএসসি, মাদ্রাসা, দখিলসহ অন্যান্য) বন্ধ রাখতে হবে।
► কোভিড পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন জোরদার করা।
► যারা রোগীদের কন্ট্রাকে আসবে তাদের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখা।
► বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কেয়ারেন্টিনে রাখা এবং এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া।
► আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা।
► স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন প্রয়োজনে জোরদার করা।
► পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল বাড়ানো, মনিটরিং জোরদার করা।১
► সব ধরনের সভা ভার্চুয়াল করা এবং
► পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করা।
এসব প্রস্তাবের পাশাপাশি কয়েকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও ৫টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন- বইমেলা বাতিল করতে হবে, বদ্ধস্থানে বা কক্ষে ইফতার পার্টি না করতে নির্দেশনা দিতে হবে, ঈদের ছুটি কমিয়ে ১ দিন করতে হবে, কক্সবাজারসহ পর্যটন এলাকায় যাতায়াত সীমিত করতে হবে এবং মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।