নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিআরবির পরিত্যক্ত ভূমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের (পিপিপি) আওতায় হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধীতাকারীদের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম ৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘এই হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধীতা করা মানে শেখ হাসিনার বিরোধিতা করা।’
শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সম্মিলিত কর আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে বিরোধিতা করে প্রতিদিনই নানা কর্মসূচি পালন করে চলছে সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে উঠে বেশ কয়েকটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। তাদের আবার বেশিরভাগই সরকার দলীয় নেতাকর্মীও রয়েছেন।
শুরু থেকেই শেখ হাসিনার নেওয়ার এই প্রকল্পের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মন্ত্রী বলেন, পিপিপি আওতায় নির্মাণাধীণ হাসপাতালটির নামকরণ করা হচ্ছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে। এই হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
মোছলেম উদ্দীন আহমদ এমপি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় চট্টগ্রামের রেলওয়ের ভূমিতে পিপিপির মাধ্যমে সিআরবি এলাকায় একটি হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যেখানে বর্তমানে কিছু ঝুপড়ি ঘর ও দোকানপাট রয়েছে। অথচ এক শ্রেণির লোক কিছু না বুঝেই হীন স্বার্থে হাসপাতাল নির্মাণে বিরোধিতা করে যাচ্ছে।’‘
এই এলাকায় যখন সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন করা হয়েছে তখন বিরোধিতা করা হয়নি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে তখন বিরোধিতা করা হয়নি কেন? —সেই প্রশ্নও রাখেন প্রবীণ এই নেতা। তিনি বলেন, ‘কিছু সার্থানেস্বী মহল এভারকেয়ার, ইম্পেরিয়াল, পার্কভিউসহ বিভিন্ন হাসাপাতাল মালিকদের ইন্দনে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করছে, যা কাম্য নয়। এখন হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করা মানে শেখ হাসিনার বিরোধীতা করা।’
মোছলেম উদ্দীন আরও বলেন, উন্নয়ন এবং পরিবেশ একসাথে হয় না, উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশের বিষয়ে ছাড় দিতে হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার হাতকে শক্তিশালী করতে একসাথে কাজ করতে হবে।’
সম্মিলিত কর আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অথিতি ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এডহক কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট মজিবুল হক, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এএইচ এম জিয়া উদ্দীন, চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন, আবদুল মালেক, জয় শান্ত বিকাশ বড়ুয়া, ফিরোজ ইফতেখার, মাঈনুল আলম, ইফতেখার আনিস, আহসান উল্লাহ সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মোছলেম উদ্দিনের এই অবস্থানকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবেই দেখছেন। চট্টগ্রাম প্রতিদিনের এক প্রশ্নের জবাবে সিআরবি রক্ষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এই আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটা উনার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। যে কোনো বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এমন অবস্থান থাকতেই পারে। তবে আমি মনে করি এসব বলে উল্টো প্রধানমন্ত্রীকে ছোট করা হয়। উনার কাছে তথ্য গোপন করে এটার অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস এখানে হাসপাতাল করলে সেটার কী নেতিবাচক ফলাফল হবে— তা জানলে প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতাল করতে দেবেন না। এই হাসপাতাল না হলেই বরং জনগণের কাছে সরকারের ইমেজ বাড়বে।’