পরকীয়ায় লিপ্ত স্বামী ঘরছাড়া: সংসারে ফিরিয়ে আনলো পুলিশ

নোয়াখালী প্রতিনিধি :

বিয়ের পর থেকে সুখেই সংসার করছিলো নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের এক দম্পতি। কিন্তু সন্তান হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন স্বামী। একদিন তার স্ত্রী ওই নারীর সঙ্গে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই লেগে থাকত ঝগড়া-বিবাদ।

একপর্যায়ে স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। এদিকে স্বামী সংসার ছেড়ে চলে পালিয়ে যাওয়ায় সন্তানকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন তার স্ত্রী। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেন স্বামীকে। অনেক চেষ্টার পরও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে দ্বারস্থ হন পুলিশের।

অভিযোগ করেন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ে। স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওই ব্যক্তিকে খোঁজে বের করে সংসারে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।

সোমবার (৩০ আগস্ট) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) মো সোহেল রানা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মো সোহেল রানা বলেন, ওই গৃহবধূ বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে জানান, তার এক বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান জন্ম নেয়ার কিছুদিন পর থেকে তার স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। একদিন অপরিচিত ওই নারীর সঙ্গে স্বামীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তিনি। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এক পর্যায়ে তার স্বামী স্ত্রী সন্তান রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। প্রায় এক বছর তিনি তার স্বামীকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছেন। স্বামীর আত্মীয়-স্বজনরাও তাকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওই নারী জানতে পেরেছেন, তার স্বামী রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এরপর তিনি পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে বিষয়টি জানিয়ে সহযোগিতা চান। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মামলা করতে চাননি। তিনি চান তার স্বামী সংসারে ফিরে আসুক। তাকে ও তার সন্তানকে নিয়ে সংসার করুক।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গৃহবধূর স্বামীকে খুঁজে বের করে তাকে প্রয়োজনীয় আইনি সহযোগিতা দিতে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং থেকে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. মাজহারুল ইসলামকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে গৃহবধূকে জানানো হয়, তিনি অভিযোগ করলে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। তার ইচ্ছা অনুযায়ী স্বামীকে খুঁজে বের করে সংসারে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।

সংসার রক্ষা করতে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বনের পাশাপাশি উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিংও করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজের বিবৃতি হুবহু তুলে ধরা হলো :

*স্ত্রী-সন্তান ফেলে দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ; খুঁজে ঘরে ফিরালো পুলিশ*

[মি‌ডিয়া এন্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স উইং‌কে পাঠা‌নো মেসে‌জের ভি‌ত্তি‌তে ব্যবস্থা]/প্রেস‌নোটঃ ৩০ আগষ্ট ২০২১ খ্রি:নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে এক গৃহবধূ বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, “আমি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। যে কাজটা কেউ সারা জীবনেও করতে পারতো না সেটা আপনারা এক রাতেই করে দিয়েছেন। আমার স্বামী এখন আমার আর বাবুর খোঁজ-খবর রাখে। আমার শ্বাশুড়ি কিছু দিনের মধ্যে আমাকে নিতে আসবে।

স্যার, আপনাদের জন্য হয়তো কিছু করতে পারবো না কিন্তু নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করবো। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুক।”উক্ত গৃহবধূ বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লিখেছিলেন, তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তানের বয়স এক বছর। সন্তান জন্ম নেয়ার কিছুদিন পর থেকে তার স্বামী অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। একদিন অপরিচিত এক মেয়ের সাথে তার স্বামীকে সে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। প্রতিবাদ জানায়। সেই থেকে তার সাথে তার স্বামীর সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে তার স্বামী তাকে এবং তার সন্তানকে ফেলে রেখে চলে যায়। প্রায় এক বছর সে তার স্বামীকে নানা জায়গায় খুঁজেছে। স্বামীর আত্মীয়-স্বজনরাও তাকে সহযোগিতা করেনি। কোনো ভাবেই স্বামীকে খুঁজে পায়নি উক্ত নারী। শিশু সন্তানকে নিয়ে সীমাহীন অসহায়ত্বের মধ্যে দিনাতিপাত করছিলেন তিনি। সম্প্রতি উক্ত নারী জানতে পেরেছেন, তার স্বামী রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে বিষয়টি জানিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান।

তিনি উল্লেখ করেন, তিনি কোনো মামলা করতে চান না। তিনি চান তার স্বামী তাকে ও তার সন্তানকে নিয়ে সংসার করুক। উক্ত গৃহবধূর স্বামীকে খুঁজে বের করে তাকে প্রয়োজনীয় আইনি সহযোগিতা দিতে ওসি যাত্রাবাড়ি মো. মাজহারুল ইসলামকে নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।

উক্ত গৃহবধূকে জানানো হয়েছে তিনি অভিযোগ করলে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। কিন্তু, তিনি রাজি হননি। তার ইচ্ছা অনুযায়ী স্বামীকে খুঁজে বের করে সংসারে ফিরিয়েছে পুলিশ। সংসার রক্ষা করতে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বনের পাশাপাশি উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিংও করেছে পুলিশ।উ‌ল্লেখ্য, ভুক্ত‌ভোগীর স‌র্বোচ্চ কল্যাণ ও সুরক্ষা বি‌বেচনায় প্র‌যোজ্য ক্ষে‌ত্রে ঘটনার সা‌থে সং‌শ্লিষ্ট ব্য‌ক্তি ও বিষয়াদির নাম প‌রিচয় প্রকাশ না করার প‌লি‌সি অনুসরন ক‌রে থা‌কে মি‌ডিয়া এন্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স উইং।

শ্রদ্ধা‌ন্তে

মো. সো‌হেল রানা

এআই‌জি (মি‌ডিয়া এন্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স)

বাংলা‌দেশ পু‌লিশ