চট্টলা ডেস্কঃ বাঙালি নারী বলতেই চোখে ভেসে ওঠে শাড়ী-গহনা পড়া সুশ্রী মায়াবী চেহারার কোন মেয়ের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু যদি বলি বাঙালি কোন মেয়ে সুঠাম শরীর নিয়ে বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। এ কথা শুনে আপনি অবশ্যই চিন্তায় পড়ে যেতে পারেন।কিন্তু এ অসাধ্যকেই সাধন করেছেন চট্টগ্রামের মেয়ে মাকসুদা মৌ। কোন সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতার পেছনে না ছুটে তিনি ছুটেছেন শরীর গঠনের দিকে। ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে। ২০২০ সালের মিস্টার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় মেয়েদের বডি বিল্ডিং ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি।
ছাত্রজীবন থেকেই শরীর গঠনের পোকা মাথায় ঢুকে মৌর। তার সমবয়সী মেয়েরা যেখানে প্রসাধনী ও সৌন্দর্য চর্চায় ব্যস্ত সেখানে মৌ চালিয়ে গেছেন শরীরচর্চা। দেশ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে বেশ কয়েক বছর আগে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় পাড়ি জমান মৌ। সেখানে তার পড়ার বিষয় ছিল পাবলিক হেলথ। মূলত সেখান থেকেই শরীর চর্চা বিষয়ে ব্যাপক ধারণা লাভ করেন তিনি। আস্তে আস্তে নিজেকে গড়ে তোলেন একজন ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে।
২০১৯ সালে দেশে এসে ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রামের হালিশহর বড়পুল এলাকার ফিটনেস সেন্টার মেট্রোফ্লেক্স জিমে। তখনই চোখ পড়ে মিস্টার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায়। বন্ধু ও কাজিনদের অনুরোধে অংশগ্রহণ করেন ২০১৯ সালের সে প্রতিযোগিতায়। মেয়েদের বডি বিল্ডিং ক্যাটাগরিতে সেবার হয়েছিলেন প্রথম রানার্স আপ। সেবারের প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২০২০ সালের মিস্টার বাংলাদেশে একই ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেন। এবার আর রানার্স আপ নয়, হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন।
বাঙালি মেয়েদের শুধু ঘর-গৃহস্থালী ও সৌন্দর্য চর্চা নিয়ে পড়ে না থেকে শরীর গঠনে মনোযোগী হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। আর পরিবারকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মেয়েরা শরীর চর্চায় এগিয়ে এলে ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন বলে জানান মৌ।
পারিবারিক জীবনে অবিবাহিত মৌ মা-বাবার সাথে হালিশহর বড়পোল এলাকায় থাকেন। ৪ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট মৌ। বাবা নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মা গৃহিনী। বাবা-মায়ের সহযোগিতায় এতদূর এসেছেন বলে জানান।
করোনা ভাইরাসসহ যেকোন রোগ-বালাই থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত স্বাস্থ্য চর্চার কোন বিকল্প নেই বলে জানালেন মৌ। ভবিষ্যত পরিকল্পনা হিসেবে জানালেন দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা ও পছন্দের তারকা হলিউড অভিনেতা আরনল্ড শোয়ার্জনেগারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করা।