নগর প্রতিবেদক :
চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগে আকর্ষণসহ অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সমস্যা ও সমাধানের প্রস্তাবনা নিয়ে বিজিএমইএ সাথে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় নগরের খুলশী এলাকার বিজিএমইএ ভবনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি হচ্ছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, চট্টগ্রামকে আমরা সবসময়ই বাণিজ্যিক রাজধানী বলে থাকি। তবে চট্টগ্রাম ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত। তাই আর শুধু মুখে নয়, পোশাক খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করে চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানীতে পরিণত করতে হবে।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, করোনার কারণে পোশাক খাতে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। অর্ডার বাতিল হওয়ায় লোকসানে পড়ে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ১৯৮৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩৫ বছরের ব্যবধানে কারখানা সংখ্যা কমার পাশাপাশি কমেছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামে গ্যাস, বিদ্যুৎ সংকটসহ অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যার কারণেও পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
পোশাক খাতে বিরাজমান সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয় না থাকায় পোশাক খাতে ঋণ গ্রহণ ও আমদানি ঋণপত্র খুলতে চট্টগ্রাম থেকে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের ভ্যাট আদায়ে কার্যক্রম সহজ করা প্রয়োজন। আমদানি করা পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি এলসিএল পণ্য রাখতে শেড বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি চট্টগ্রামে জমির দাম বেশি থাকায় বিনিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
৯টি প্রস্তাবনা দিয়ে বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি বলেন, পোশাক খাতকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে গার্মেন্টস পল্লী স্থাপন, ব্যাংকের বিনিয়োগ বান্ধব উদ্যোগী ভূমিকা, সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে ক্ষমতায়ন করা, বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়কে ক্ষমতায়ন করা, বিমানবন্দরে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর সঙ্গে বিমানের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি করা, চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাড়ানো, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা/জরুরি সেবা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেস’ ফ্যাক্টরসমূহ সহজ করা প্রয়োজন।
সভায় বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি এস.এম. আবু তৈয়ব বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে অর্থনীতির নতুন হাব। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে আমরা ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছি। করোনার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেও লোকসানে পড়েছেন। এখন কার্যাদেশ বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। তাই আমরা বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধান করে চট্টগ্রামকে অর্থনৈতিকভাবে আরো বেশি শক্তিশালী করতে চাই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ নেতা রফিকুল আলম চৌধুরী, পরিচালক এ এফ সফিউল করিম, হাসান জেকি, নাসরুদ্দিন চৌধুরী, মইনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু ও সাহাবুদ্দিন সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।