নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে (৩৭) নির্যাতনের আগে দুই দফায় ধর্ষণের মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর আদালত থেকে বের হয়ে ওই গৃহবধূ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি খুশি। বিচারে আমি সন্তুষ্ট। সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
আদালত প্রাঙ্গণে নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী ও পোশাক শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার বলেন, এটা সারাদেশের আলোচিত ঘটনা। আজকে যে রায় দিয়েছে তাতে আমরা খুশি। আমরা চাই, আর কোনও নারী যেন অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম। তারা বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ লাবলু। বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ জানান, আলোচিত গৃহবধূ ধর্ষণ মামলাটিতে আমরা আদালতে সাক্ষী উপস্থাপন, জেরা ও জবানবন্দি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন ও আসামিপক্ষে তিন জন সাফাই সাক্ষী প্রদান করেন।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর ওই নারীকে তার ঘরে ঢুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে দেলোয়ার ও তার বাহিনী। নির্যাতনকারীরা ওই ঘটনা মোবাইলে ধারণ করে, যা ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই নারী ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর ও ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুই দফায় তাকে ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে দেলোয়ার ও কালামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মামলা করেন।
এ ছাড়া বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফিসহ আরও দুটি মামলা করেন তিনি।গত বছরের ৬ অক্টোবর করা মামলায় চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি দুই আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ১৩ কার্যদিবসে বাদীপক্ষের ১২ জন ও আসামিপক্ষের তিন জনসহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে অভিযোগপত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করা হয়।