আনোয়ারা প্রতিনিধি :
জরুরি সভায় আনোয়ারা উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা জরুরি সভা করে ঘোষণা দিয়েছেন ১৫ দিনের মধ্যে সদস্য সচিব হেলালকে না সরালে কঠোর কর্মসূচি দেবেন তারা।
শুক্রবার (২০ মে) চট্টগ্রামের স্টেশনের একটি হোটেলের হল রুমে এই বিষয়ে করনীয় নির্ধারনে এই জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অপহরণ, হত্যা ও প্রতারণা মামলাসহ নানা অপরাধের বির্তকিত চরিত্র হেলাল উদ্দিনকে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সচিব পদ দেয়ার প্রতিবাদে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে জরুরি সভা করে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির নেতারা।
আনোয়ারা বিএনপিকে ধ্বংসের হাত বাঁচাতে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির দাবিসমুহ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের কাছে লিখিতভাবে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় জরুরি সভায়।সভায় দলের নেতা আনোয়ারার ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন অপহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত হেলাল উদ্দিনকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব করায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, জামাল উদ্দিনের রক্ত যার হাতে লেগে আছে অবিলম্বে তাকে সদস্য সচিব পদ থেকে না সরানো হলে কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির কমিটিতে বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন অপহরণ ও হত্যা মামলায় সরাসরি জড়িত, বহু প্রতারণা ও চেক ডিস অনার মামলার আসামী হেলাল উদ্দিনকে ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি থেকে অপসারণ করতে হবে। আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির আপ্লূত আবেগের সাথে সম্পৃক্ত লোম হর্ষক অপহরণ ও গুম হওয়া বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিনের রক্ত যার হাতে লেগে আছে তার সাথে কেউ বিএনপি করবে না। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এবিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
‘নবগঠিত আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির আহবায়ক মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট মোঃ ফৌজুল আমিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই জরুরি সভায় যোগ দেন কমিটির নয় যুগ্ম আহবায়ক।সভায় বক্তব্য রাখেন নতুন যুগ্ন আহবায়ক মন্জুর উদ্দীন চৌধুরী, আবু মোহাম্মদ নিপার, ভিপি মোজাম্মল হক, মেজবাহ উদ্দীন জাহেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির আনছার, আবুল কালাম আবু, মোঃ হাসান চৌধুরী মোঃ ইলিয়াছ কাঞ্চন।
এছাড়া নতুন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী দেশের বাইরে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন সভায়।
আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির নতুন গঠিত কমিটির সদস্য সচিব পদ থেকে জামাল উদ্দিন হত্যা ও অপহরণ মামলার আসামী হেলালকে অপসারণের দাবি জানিয়ে কমিটির ৪২ জন সদস্য একযোগে জরুরি সভার রেজুলেশন স্বাক্ষর করেন।
রেজুলেশনে বিএনপি নেতারা যেসব দাবি তুলে ধরেছেন সেগুলো হলো – দক্ষিণ জেলায় অন্যান্য উপজেলায় অনুসৃত নীতিমালা লঙ্গন করে ৫১ সদস্যের কমিটির স্হলে বিশেষ ব্যাক্তিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট বিএনপির কমিটি দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা, হেলালকে কমিটি থেকে অপসারণ, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্র থেকে বিতর্কিত ব্যক্তি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহন, ওয়ার্ড পর্যায়ের যুবদল/ছাত্রদল নেতাদের উপজেলা কমিটি থেকে সরিয়ে ত্যাগী ও সিনিয়র সদস্যদের পদায়ন করা, আওয়ামী লীগ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা।সদ্য ঘোষিত আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, মোঃ নাজিম উদ্দীন মুন্সি, জামালউদ্দীন আনছারী, ডাঃ আবুল কাসেম, শরীফ মোঃ কামাল, মোঃ জসীম উদ্দীন, মোঃ ইউসুফ মাষ্টার , আবদুল মঈন চৌধুরী ছৌটন, বদরুল হক চৌধুরী, মাষ্টার আশরাফ আলী, মোঃ ফরোজ খানঁ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ আবু সাদেক, মোঃ বদিউল আলম, নজরুল আলম, মোঃ ইলিয়াছ করিম মিঠু, এম লোকমান, এস,এম কামরুল ইসলাম, মোঃ ইদ্রীচ, মোঃ জসীম উদ্দীন, মোঃ মঈন উদ্দীন, আবদুল গফুরসহ ৪২ জন একমত হয়ে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোশারফ হোসেন জানান, কমিটির কপি এখন পর্যন্ত আমাকে অফিসিয়ালি দেয়াই হয় নি। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তি হেলাল তার একক ছবি ব্যবহার করে নিজস্ব কর্মসূচীকে দলীয় কর্মসূচী হিসেবে প্রচার করে শুরুতেই দলে বিভাজন সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন। কমিটি করার আগেই আনোয়ারা থেকে জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়া আট সদস্য ‘কালা হেলাল’র বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। গণমাধ্যমে জামাল উদ্দিন হত্যায় গ্রেফতার হওয়া আসামি শহিদ চেয়ারম্যানের জবানবন্দি প্রকাশিত হয়েছে, হেলালের বিরুদ্ধে আনা প্রতারণা, চেকের মামলার সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
আনোয়ারা হতে দক্ষিণ জেলা কমিটিতে প্রতিনিধিত্বকারী ৮ সদস্য কতৃক সুনিদিষ্ট অভিযোগ দেওয়া সত্বেও এই বির্তকিত হেলাল উদ্দিনকে কমিটিতে সদস্য সচিব পদে কার ইশারায় বসানো হলো?সভায় আহব্বায়ক কমিটির ৬১ জন সদস্যের মধ্যে ৪২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরে আনোয়ারা যুবদলের সদস্য চতরীর কৃতিসন্তান আলমগীরের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহিত হয়৷