নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন ব্যারিষ্টার কলেজ রোডের আব্দুল মাবুদ সওদাগর বাড়ীর রাস্তায় আফিয়া ম্যানসনের ছয় তলা ছাদ থেকে পড়ে ওই বিল্ডিং এর ইনচার্জ ফারুক সর্দার’র (৫৫) রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৪মে) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। আফিয়া ম্যানসন বিল্ডিং এর ছাদ থেকে পড়ে ওই ইনচার্জের মৃত্যু হয়েছে পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে দাবী তোলা হলেও মৃত্যুর বিষয়টি স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে না জানানোর ফলে ওই এলাকায় এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তাঁর বাড়ি বরিশালের পটুয়াখালীর মঠবাড়িতে বলে জানা গেছে। তার এক ছেলে আল-আমিন ওই বিল্ডিং’র নীচে একটি টি-স্টোল করেন এবং ওই এলাকার দোকান মালিক সমিতির সদস্য।
এলাকা বাসীর সূত্র থেকে জানা যায়, ফারুক সর্দার দীর্ঘ ৮ বছরের বেশি সময় ধরে আরমান নামের জৈনক ব্যাক্তির মালিকাধীন আফিয়া ম্যানসনের ইনচার্জৈর দায়িত্ব পালন করছেন। ওই বিল্ডিং এর তয় তলায় তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে এবং তিন মেয়ের বসবাস। বুধবার দুপুরে পানির ট্রান্কি কাজ করতে উঠে ছাদ থেকে পড়ে যান তিনি। তার ছেলে আল-আমিন ও অপর এক আল-আমিনের ভাতিজা মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে আশপাশের কোন হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ফয়েজলেক ইম্পিরিয়াল হসপিটাল নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ এলাকায় নিয়ে এসে স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ কাউছার ও বিল্ডিং’র মালিক আরমানের সহযোগিতা এ্যাবুলেন্স যোগে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু স্থানীয় ইপিজেড থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান নি পরিবার সহ এলাকার কোন দায়িত্ববান ব্যাক্তি।
এ বিয়য়ে অনেক খোঁজ করে বিল্ডিং’র মালিক আরমানের ফোন নাম্বার ও ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় নি। কারণ, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা সেখানে থাকেন না।
তবে স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ কাউছারের কাছে পুলিশকে কেন খবর দেওয়া হয় নি জানতে চাইলে তিনি জানান, পরিবার ও বিল্ডিং’র মালিক চায়নি বলেই জানানো হয় নি। তিনি কিভাবে মারা গেছেন জানতে চাইলে বলেন, ছাদের টাঙ্কি পরিষ্কার করতে গিয়ে পা পিছলে ছয় তলা থেকে রেলিং ভেঙ্গে নীচে পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন, পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ইপিজেডের থানার ওসি তদন্ত মোঃ কামরুজ্জামান জানান, থানার ডিউটি অফিসারের কাছে এ বিষয়ে ওই এলাকার একজন ফোন করলে ঘটনাস্থলে এস আই তরিকুল যান। কিন্তু তার তিন ঘন্টা আগেই তারা লাশ এ্যাম্বুলেন্স যোগে নিজ এলাকায় উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। পরে নিহতের ছেলে আল-আমিনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, সে কুমিল্লা হাইওয়ে সড়কে আছেন বলে জানান।
কেন পুলিশকে জানানো হলো না এবং এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পরিবারের কারো প্রতি অভিযোগ ছিল না বলেই পুলিশকে জানায় নি, তবে বিষয়টি পুলিশের নজরদারিতে রাখা হবে।
এদিকে, পুলিশকে না জানানো সহ আশপাশের হাসপাতালে না নিয়ে দূরের হাসপাতালে কেন নেয়া হয়েছে তা নিয়ে এলাকায় অন্যান্য বাসিন্দাদের মধ্যে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী দাবি করছেন ইপিজেড এলাকার আশেপাশে ও বন্দর এলাকায় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় এক্সেস রোড সহ এর আশেপাশে অনেক হাসপাতাল ছিল সেখানে না নিয়ে পাহাড়তলী ফয়েজ লেক এলাকায় উল্লেখিত হাসপাতালে কেন নেয়া হলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানান, ঘটনার দিন এক ঘন্টা আগেও ছেলে আল-আমিনের সাথে ঝগড়া হয় টি স্টলে জুয়ার বোর্ড বসানোর বিষয় নিয়ে ওই ফারুক সর্দাররের সঙ্গে। বাবা তার ছেলেকে এ নিয়ে বকাঝকা করেছেন সেদিন। জানা যায়, ছেলে আল-আমিনের টি-স্টলে লুডু খেলার জুয়ার বোর্ড বসিয়ে আসছিল দীর্ঘ দিন ধরে।
এছাড়াও বিল্ডিং এর মালিক আরমান ও স্থানীয় প্রতিনিধি কাউসারের সহযোগিতায় স্থানীয় থানা পুলিশকে না জানিয়ে কেন লাশ নিয়ে চলে গেল পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি রহস্যজন বলে মনে হচ্ছে এলাকাবাসীর। সেই সাথে এলাকাবাসী আরও জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উদঘাটন হবে এমনটাই দাবি জানান তারা।