স্পোর্টস ডেস্ক:
অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা যাচ্ছে কার ঘরে? এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে ফেরছে।
তবে উড়ন্ত ফর্মে থেকে ইংল্যান্ড নাকি আর কপাল জোরে ফাইনালে আসা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তানের। দুই দলের লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই রবিবার (১৩ নভেম্বর) পর্দা নামতে যাচ্ছে অষ্টম আসরের।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ফাইনালটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিদায়ের পর একটি বিষয় নিশ্চিত হয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। সেটি হলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের সঙ্গী পাচ্ছে। এতদিন তারাই একমাত্র দল ছিল, যাদের ক্যাবিনেটে শোভা বাড়িয়েছে দুটো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মেলবোর্নে কাল পাওয়া যাবে দুবার জেতা আরেক দলকে। চলতি বিশ্বকাপে ‘এ’গ্রুপে ছিল ইংল্যান্ড। আর পাকিস্তান ছিল ‘বি’ গ্রুপে। যার যার গ্রুপ থেকে রানারআপ হয়ে সেমিফাইনালে আসে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। এবার দুদলেরই মিশন ফাইনাল। পাকিস্তানের অনিশ্চয়তায় ঘেরা আসরে শ্রেষ্ঠত্ব পাওয়ার থেকে মাত্র নিঃশ্বাস দূরত্বে। সেই দূরত্ব না ঘোচাতে তৈরি ইংল্যান্ড। ফাইনালের ওয়ার্মআপ ধরলে সেমিফাইনালে দারুণ খেলেছে উভয় দল। প্রথম সেমিতে নিউজিল্যান্ডকে পাকিস্তান, দ্বিতীয় সেমিতে ভারতকে ইংল্যান্ড উড়িয়ে দিয়েছে। আত্মবিশ্বাসের পালে তাই জোর হাওয়া দুই শিবিরে।ভারসাম্যপূর্ণ দল পাচ্ছে দুই দলই। ওপেনাররা আছেন চমৎকার ছন্দে। সেমিফাইনালে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ১০৫ রানের জুটি সহজ করে দেয় পাকিস্তানের জয়ের পথ। ভারতকে ১০ উইকেটে হারানোর ম্যাচে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন অ্যালেক্স হেলস ও জশ বাটলার। যদিও ইংল্যান্ড দলকে ভাবাচ্ছে মার্ক উড ও ডেভিড মালানের চোট। তাঁদের শেষ মুহূর্তে না পেলে বিকল্প তো আছেই।
মেলবোর্নের পিচে রান তোলা যত সহজ, বল হাতে আগুন ঝরানোর সম্ভাবনাও তত বেশি। পাকিস্তানের প্রধান ভরসা শাহিন শাহ আফ্রিদি, যিনি প্রস্তুত গতির গোলা নিয়ে। তাকে সঙ্গ দিতে হারিস রউফ, নাসিম শাহ আছেন। অপরদিকে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব স্যাম কারানের হাতে। ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডানরা তৈরি পাকিস্তানের ভীত নাড়িয়ে দিতে।ব্যাট বলের ভারসাম্য পূর্ণতা পাবে মিডল অর্ডার ও অলরাউন্ডারদের দিয়ে। শান মাসুদ, শাদাব খানরা পাকিস্তানের বাজির ঘোড়া, মঈন আলি, লিয়াম লিভিংস্টোন ইংলিশ শিবিরের অস্ত্র। বেন স্টোকস ছন্দে না থাকলেও যে কোনো সময় জ্বলে উঠলে বিপক্ষের জন্য বড় মাথাব্যথা তিনিই হবেন।
তাছাড়া, ফাইনালে জ্বলে ওঠার সক্ষমতা আছে দুই দলের তারকাদের মাঝেই। বড় মঞ্চে নিজেকে রাঙানোর সুযোগ নিশ্চয়ই হাতছাড়া করতে চাইবে না কেউ।২০১৬ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। স্টোকসের বলে কার্লোস ব্রেথওয়েটের চার বলে চার ছয়ে সেই ফাইনাল হাতছাড়া হয় ইংলিশদের। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রবল নাটকীয়তা শেষে বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ইংল্যান্ড। সেটি বাড়তি প্রত্যয় জোগাবে তাদের।
২০১০ সালে একমাত্র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। পাকিস্তান ২০০৯ সালে জিতে নিজেদের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ট্রফি। এরপর গত ১৩ বছরে খেলতে পারেনি ফাইনাল।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ২৮ বার। যাতে ইংল্যান্ড জিতেছে ১৮ ম্যাচে, পাকিস্তানের শেষ হাসি ৯ ম্যাচে। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে একদিনের বিশ্বকাপ জয় করে পাকিস্তান। সেবার যে রূপরেখা ধরে ফাইনালে আসে তারা, এবারও অভিন্ন পথচলা। শুধু ফরম্যাট ভিন্ন। তাতে কী! পাকিস্তান চায় সেবারের পুনরাবৃত্তি। ইংলিশদের চাওয়া আরেকবার ঘরে ফিরুক বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্ব।
পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ : বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ হারিস, শান মাসুদ, ইফতেখার আহমেদ, শাদাব খান, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ নওয়াজ, নাসিম শাহ, শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফ।
ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ : জস বাটলার (অধিনায়ক), ফিল সল্ট, অ্যালেক্স হেলস, বেন স্টোকস, হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি, ক্রিস ওকস, স্যাম কারান, ক্রিস জর্ডান, আদিল রশিদ।