রাজনৈতিক ডেস্ক:
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৭৮তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর)।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে উত্থান-পতন ও নানা ঘটনাপ্রবাহে ‘চট্টলবীর’-এ পরিণত হওয়া মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ২০১৭ সালে জন্মদিন ঢাকাতেই বিশ্রামে থেকে উদযাপন করতে হয়েছে।
২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর সকলকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরবিদায় নেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক।সাংসারিক জীবনে দুই ছেলে ও চার কন্যা সন্তানের জনক মহিউদ্দিন চৌধুরী শারীরিকভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করলেও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তার মনোবল ও সাহস ছিল অটুট।
চট্টগ্রামবাসীর বিপদে অনেকটা সুস্থ মানুষের মতোই ছুটে গেছেন অকুস্থলে। চট্টগ্রামের প্রগতিশীল চেতনার বাতিঘর এ রাজনীতিক প্রয়াত হলেও তার নাম উচ্চারিত হলেই এখনও দুর্বার গতিতে দেশ ও জনগণের অধিকারের সংগ্রামে ছুটে যান দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা।কলেজ পড়ুয়া ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ রাজনীতিক সকলের আস্থায় আজও দেদীপ্যমান এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টলার রাজনীতির উর্বরভূমি হিসেবে পরিচিত রাউজানের গহিরার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।ছাত্রজীবন থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে পা বাড়ান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দ্বিতীয় দিনে নুর আহাম্মদ সড়কের নেভাল অ্যাভিনিউ মোড়ে লড়াই করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। এরপর ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে পাহাড়ি এলাকা দিয়েই সদলবলে ঢুকে পড়েন দেশে। প্রাণপণ লড়াই করেন দেশমাতৃকার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের পর ক্রমেই শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এ নেতা। ফিরে এসে চট্টগ্রামকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসে হারিয়ে ফেলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু মৌলভী সৈয়দকে। পরবর্তী দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় মহিউদ্দিনকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছিল। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থরক্ষার আন্দোলন করেছেন তিনি।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। টানা ১৭ বছর এ সংস্থাকে সফলভাবে পরিচালনা করে নগরবাসীকে একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিতে সক্ষম হন।
গণমানুষের নেতা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। এর মধ্যে রয়েছে- মরহুমের কবর জেয়ারত, পবিত্র কোরআন খতম, পুষ্পমাল্য অর্পণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং মোনাজাত। এছাড়া এতিম ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার পরিবেশন করা হবে পারিবারিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের পক্ষ থেকে।