নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রামের একমাত্র মুক্তাঙ্গন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থানসহ শিরিষ তলা তথা সমগ্র সিআরবি ছিল, সিআরবি আছে, সিআরবি থাকবে। কোন বেনিয়া গোষ্ঠীর হাতে সিআরবিকে তুলে দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন নাগরিক সমাজের আন্দোলনকারীরা।
১১ আগস্ট বুধবার নাগরিক সমাজ পক্ষে চট্টগ্রাম নগরের সিআরবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ সমস্ত কথা বলেন।
নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইদ্রীস আলী, ডা. মাহফুজুর রহমান, এডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, নাট্যজন সাইফুল আলম বাবু, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান, এডভোকেট এএইচএম জিয়াউদ্দিন, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, স্বপন মজুমদার, দেওয়ান মাকসুদ, জাসদ সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বাবুল, জাসদ উত্তর জেলা সভাপতি বেলায়েত হোসেন, সাংবাদিক কামাল পারভেজ, যুবনেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক লায়লা আকতার এটলি, দৈনিক আজাদীর প্রধান প্রতিবেদক হাসান আকবর, পরিবেশবিদ আলিউর রহমান, সংস্কৃতি কর্মী সজল চৌধুরী, ন্যাপ নেতা মিঠুল দাশগুপ্ত প্রমুখ ।
আন্দোলনকারী বক্তারা এ সময় বলেন, সিআরবি এলাকা হলো চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক অক্সিজেন ভূমি বৈচিত্র্য ও প্রাণ বৈচিত্র্যের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র। এতে হাসপাতাল কিংবা অন্য কোন স্থাপনা করলে এর পরিবেশ প্রকৃতি নষ্ট হবে এবং এর প্রভাব চট্টগ্রাম মহানগরের ৭০ লক্ষ মানুষকে ভোগ করতে হবে। এছাড়াও সিআরবি এলাকা হলো চট্টগ্রামের খেলাধুলা-বিনোদন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার প্রধান কেন্দ্র। এখানে সারাবছর বর্ষবরণ বর্ষবিদায়সহ বহুবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে। হাসপাতাল নির্মান হলে এ চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। চট্টগ্রামের সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলার ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে এর প্রভাব বিশ্বমানের চট্টগ্রাম গড়ার পথকে রুদ্ধ করবে।’
বক্তরা বলেন, ‘সিআরবিতে প্রস্তাবিত হাসপাতালের জায়গাতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান চাকসু জি.এস. আবদুর রবসহ আরো দশজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদের কবর। এই কবরের উপর ব্যক্তিমালিকানাধীন মুনাফামুখী হাসপাতাল শুধু নয় যে কোনো স্থাপনাই হবে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার শামিল।
তারা আরও বলেন, ‘সিআরবি এলাকাকে সিডিএর ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যানে হেরিটেজ জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে শতবর্ষোর্ধ শত শত বৃক্ষসহ স্থাপনা রয়েছে যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরিবেশের স্মারক। এখানে হাসপাতাল কিংবা কোনো বানিজ্যিক স্থাপনা নির্মিত হলে এর স্মারক ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, চট্টগ্রামের ফুসফুসকে রক্ষায় চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবির যথাযথ মর্যাদা দিয়ে সিআরবি এলাকায় প্রস্তাবিত হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে নিন।’