নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর আগে গত সোমবার বিশ্বের প্রথম করোনা টিকা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অনুমোদন পেয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি দুই ডোজের এ টিকা।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ফাইজার টিকা দেওয়া হলেও ভ্যাকসিনটি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এতদিন চট্টগ্রাম করোনার এই টিকা থেকে বঞ্চিত ছিল। তবে এখন চট্টগ্রামে এই টিকা সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি টিম ইউনিসেফের প্রতিনিধিসহ চট্টগ্রামে ফাইজারের টিকা রাখার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সম্ভাব্যতা যাচাই করে গেছেন।
ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এ বিষয়ে বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় ইউনিসেফের একটি টিম চট্টগ্রামে এসেছিল। তারা ১৮ ও ১৯ আগস্ট দুইদিন আমাদের স্টোরেজ পরিদর্শন করেছেন। চট্টগ্রামে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ উপযোগী স্টোরেজ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তারা দ্রুত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি স্টোরেজ প্রস্তুত হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই চট্টগ্রামে ফাইজারের টিকা দেওয়াও শুরু করা যাবে।’
তবে এক্ষেত্রে শুধু স্টোরেজ নিশ্চিত করাও শেষ কথা নয়। ফাইজারের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে টিকাদান কেন্দ্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে কী ভাবছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে সিভিল সার্জন বলেন, ‘শুরুতে যেসব কেন্দ্রে এসি ব্যবস্থা আছে, সেসব কেন্দ্রেই ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে।’
আগামী ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় ফাইজারের ১০ লাখ ডোজ টিকার চালান দেশে আসছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের মাধ্যমে কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজারের এই টিকা দেশে এসে পৌঁছবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে আরও ৫০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা দেশে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জানা গেছে, সেখান থেকেই চট্টগ্রামে ফাইজারের টিকা বরাদ্দ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনা সামনে রেখে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রস্তুতিও নিচ্ছে।গত ২৭ মে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) বাংলাদেশে ফাইজারের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
এরপর ৩১ মে কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় দেশে ১ লাখ ফাইজারের টিকা আসে। এর সবই দেওয়া হয়েছে শুধু ঢাকায়।জানা গেছে, চট্টগ্রামের ইপিআই স্টোরগুলোতে এখন পর্যন্ত সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার কোল্ড চেইন ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যদিকে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রার কোল্ড চেইন ব্যবস্থা থাকা দরকার। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ এখন এ দিকটায় নজর দিচ্ছে।