নগর প্রতিবেদক :
জিনের বাদশা পরিচয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কোতোয়ালী থানার হাজারী গলি এলাকা থেকে ১ জন ও টেকনাফ থানার হোয়াক্যাং এলাকা থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) নগরের কোতোয়ালী থানার হাজারি গলি এলাকা থেকে মামলার ৪ নম্বর আসামি আবু তৈয়বকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যমতে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মামলার ১ ও ২ নং আসামি মো. আব্দুল মান্নান (৫৮) ও মো. জোবাইর হোসাইন রিজভীকে (২৩) কক্সবাজার জেলার টেকনাফের হোয়াক্যাং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আব্দুল মান্নান (৫৮),মোঃ জোবাইর হোসাইন রিজভী(২৩) ও আবু তৈয়ব(৫৮)।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ১ জন পলাতক আছেন। গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালাতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারী ২০১৯ সালে হাজারী গলি স্বর্ণের দোকানে তার স্ত্রীর স্বর্ণ বিক্রয় করার জন্য গেলে স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী অর্থাৎ জিন চক্রের খপ্পরে পড়েন ভুক্তভোগী মো.আবুল হাছান সহিদ। কিন্তু বাংলাদেশেও জিন চক্রের মন্ত্রে শিকার হলো তার জীবন অধ্যায়।
মো.আবুল হাছান সহিদ সৌদি আরব দীর্ঘ ২২ বছর সৌদি আরবে থেকে ২০১৮ সালে ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসে। তার আবাসিক হোটেল ব্যবসা সৌদি আরবের স্থানীয় আদনান সাঈদ আল সাদী নামক (কপিল) এর নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত হতো । সৌদি আরবের নিয়ম মোতাবেক সৌদি নাগরিক আদনান সাঈদ আল সাদীর নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলিয়া তার ব্যবসায়ের সমস্ত টাকা উক্ত ব্যাংক একাউন্টে জমা হতো। ছুটি কাটানোর জন্য মোঃ আবুল হাছান সহিদ বাংলাদেশে আসে এবং ছুটি শেষে পুনরায় সৌদি আরবে ফেরৎ যেতে চাইলে দেখেন যে, তার ভিসাটিতে সৌদি আরবে প্রবেশ নিষিদ্ধ সীলমোহর দেওয়া। তিনি আর সৌদি আরবে যেতে পারেননি।
পরে সৌদি নাগরিক আদনান সাঈদ আল সাদী পরিকল্পিতভাবে তার ব্যবসায়ের সমস্ত টাকা এবং হোটেল সমূহ আত্মসাৎ করার জন্য তাকে সৌদি আরব প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে । তিনি প্রতারণার শিকার হয়ে ব্যবসায়ের সমস্ত টাকা হারিয়ে এক প্রকারের নিঃস্ব হয়ে জীবন যাপন করিতে থাকে।
জিন চক্র ভুক্তভোগীকে জানান, ধর্মীয় আধ্যাত্বিক শক্তি এবং জীনের মাধ্যমে সৌদি নাগরিক আদনান সাঈদ আল সাদী (৪২) কে বাংলাদেশে এনে দিতে পারবে এবং বাংলাদেশে এসে তার সম্পূর্ণ টাকা ফেরৎ দিয়ে যাবে সে । তবে সৌদি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত আনতে হলে শুরুতে ২ লাখ এবং ৩ ভরি স্বর্ণ ও আমেরিকান এক হাজার টাকার ডলার জিনের বাদশা’কে দিতে হবে।
এভাবে ধাপে ধাপে দিতে হলো ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। আর এ বিষয়টি কারো কাছে বললে তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হবে এবং তার পালিত জিন তাকে গলা চিপে হত্যা করবে বলে। এমনকি তার সন্তানদের উপর বড় ধরনের বিপদ আসবে বলে জানানা জিন চক্র। কিন্তু কাজের কাজ কিছু না হওয়াতে আত্মসাতের টাকা ফেরত চাইলে কথিত জিন চক্র হত্যার হুমকি দেয় ভুক্তভোগীকে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করলে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।