নিজস্ব প্রতিবেদক:
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, নিকাহ রেজিস্ট্রারগণের বিশাল অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। সমৃদ্ধশালী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে বাল্যবিবাহমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কারণ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিতঅগ্রগতি লাভ করে যদি বাল্যবিবাহ প্রত্যাশানুযায়ী হ্রাস না পায় তাহলে দেশের অগ্রযাত্রার কোন মূল্য থাকবে না।
মঙ্গলবার (২মে) সকাল ১০টায় নগরীর শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোডে লেডিস ক্লাবে ‘‘বাল্যবিবাহ নিরোধে নিকাহ রেজিস্ট্রারগণের দায়িত্ব, কর্তব্য ও ভূমিকা’’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার মিশন চাকমা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের রেজিস্ট্রি অফিসসমূহের পরিদর্শক (আইআরও) মোঃ আশরাফুজ্জামান।
বাল্যবিবাহ নিরোধে সরকারি নির্দেশনা ও নিকাহ রেজিস্ট্রারগণের ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য কালে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর এ দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন ছিল তারই প্রেক্ষাপটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রুপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আজ সর্বক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পন করেছে। সর্বক্ষেত্রে অগ্রগতির ছোয়াঁ লেগেছে। দেশের এ অগ্রযাত্রায় সর্বস্তরের মানুষ নিজ অবস্থান থেকে মহতি অবদান রেখে চলেছেন। তাই তিনি শুধু বাল্যবিবাহ নিবন্ধন থেকে বিরত থাকার মধ্যে নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য শেষ না করে বাল্যবিবাহ নিরোধে নিকাহ রেজিস্ট্রারগণ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি এক্ষেত্রে সবার অবস্থান থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তিনি নিকাহ্ রেজিস্ট্রারগণকে উদাত্ত আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম জেলার যে কোন স্থানে বাল্যবিবাহ হচ্ছে মর্মে কোন তথ্য প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃপক্ষ অথবা তাঁকে মোবাইল অথবা অন্য কোনভাবে অবহিত করার জন্য তিনি নিকাহ রেজিস্ট্রারগণকে অনুরোধ করেন। এক্ষেত্রে প্রমাণ সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে তিনি তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
পরে জেলা প্রশাসক কর্মশালায় উপস্থিত নিকাহ রেজিস্ট্রারগণের সঙ্গে পারস্পরিক মত বিনিময় করেন এবং তাদের বিবিধ সমস্যা, মতামত ও প্রস্তাবনার বিষয়ে অবহিত হন। প্রয়োজনীয় যেকোন ক্ষেত্রে তিনি তাদেরকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
চট্টগ্রাম বিভাগের রেজিস্ট্রি অফিসসমূহের পরিদর্শক মোঃ আশরাফুজ্জামান অত্যন্ত সাবলীলভাবে বাল্যবিবাহ নিরোধ সংক্রান্ত বিধি-বিধানসমূহ ব্যাখ্যা করেন এবং উক্ত বিধানাবলি যথাযথভাবে প্রতিপালনসহ বিধিসম্মতভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিকাহ রেজিস্ট্রারগণকে অনুরোধ করেন। বাল্যবিবাহ নিরোধে সরকারি পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার বিষয়েও আলোকপাত করে বাল্যবিবাহ নিরোধে যথার্থ ভূমিকা পালনের জন্য তিনি নিকাহ রেজিস্ট্রারগণকে নির্দেশ প্রদান করেন।
পরিশেষে কর্মশালার সভাপতি মিশন চাকমা সকল নিকাহ রেজিস্ট্রারগণকে দাঁড় করিয়ে বাল্যবিবাহমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় অঙ্গিকার নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর ঘোষণাপত্র পাঠ করিয়ে কর্মশালার সমাপ্তি করেন।