নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম নগরীর ফুসফুস খ্যাত সিআরবির পরিত্যক্ত ভূমিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের বিরোধীতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানানোর আগেই নির্মাণাধীন হাসপাতালের বিরোধীতায় আন্দোলন কেন সেই প্রশ্নও তুলেন রেলমন্ত্রী।
যদিও এরআগে, ১৩ জুলাই রেলপথ মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিরোধীতাকারীরা বিরোধিতা করবেই। আমরা প্রস্তাবিত জায়গায় হাসপাতাল নির্মাণ করব। সেখানে পরিবেশের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। আমরা সব কিছু মেনটেইন করে আমাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।’ একই কথা জানিয়েছিলেন রেলওয়ের ডিজি ডিএন মজুমদার।
শুরুর দিকে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধীতায় নামলেও প্রথম থেকে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আ জ ম নাছির উদ্দীন।
পরে নাছিরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে অবস্থান নেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমদ এমপি। তবে সিআরবি নিয়ে যখন থমথমে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন চট্টগ্রামে বিরাজ করছে। এমন সময়ে রেলওয়ের বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শনে চট্টগ্রামে আসেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
এ সময় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ ইস্যুতে মন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘এগুলোকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে বা যেভাবে আপনারা তুলে ধরছেন কিংবা যা হচ্ছে তা আমার মনে হয় এতটা বলার কোন অর্থ নেই। কারণ আপনারা জানেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে আসছেন। এখন আপনারা চট্টগ্রামের মানুষ যদি কোন স্থাপনা আর না চান সেক্ষেত্রে জোড় করে চাপিয়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।’
আন্দোলনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আর এটা তথ্যগত কোন ভুল হচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার দরকার আছে। যে কথাগুলো বলে… অভিযোগ দিয়ে যে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে। সেটার ভিত্তি কতটুকু, সেটুকু আমাদের যাচাই বাছাই করার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েকদিন পূর্বে বোধ হয় আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। এই যে আন্দোলন, তার পূর্বেই শুরু হয়েছে আন্দোলন।’‘এই পত্র-পত্রিকায়, টেলিভিশন আমরা সেখানে দেখতেছি। কিন্তু কি নিয়ে আন্দোলন তা আনুষ্ঠানিকভাবে এটা নিয়ে রেলের কাছে কোন দরখাস্ত করেনি। মন্ত্রী বরবারও কোন দরখাস্ত করা হয়নি। আমাদের জিএম সাহেব আছে তার কাছেও কোন দরখাস্ত করা হয়নি। সচিব আছেন সেখানেও করা হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও কোন দরখাস্ত করা হয়নি। তাহলে এটা তো কি কারণে বা কেনো এই আন্দোলন সেটা তো তারা আগে কোন দরখাস্ত বা অভিযোগ দেওয়ার পর যদি জোড় করে কিছু হয় তখন না আন্দোলনের প্রশ্ন আসে…।’— যোগ করেন মন্ত্রী।
হাসপাতাল ইস্যুতে পাওয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা পাই নাই। সে অভিযোগ এখন বোধ হয় তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দরখাস্ত দিয়েছেন। তো সেটা আমরা খতিয়ে দেখবো। আর এই প্রকল্পের যে বিষয়গুলো তা সরকারের সিদ্ধান্ত হলো যে তা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপকে এনকারেজ করছে। আমাদের সমস্ত সরকারের যত প্রকল্প আছে …।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্থানীয় এবং বৈদেশিক বিনোয়োগ উৎসাহিত করার জন্য গভমেন্ট সে প্রচেষ্টা করছে। তারই আওতায় প্রকল্পটি রেলের পক্ষ থেকে প্রকল্পটি ম্যচিউর হয়েছে। এখন চুক্তি হচ্ছে, প্রকল্প তৈরি হচ্ছে, এটা নিয়ে যাচাই বাছাই হচ্ছে সেই পর্যায়ে কিন্তু কোন…। আর বহু আগে ১৩, ১৪ সালে তখন কিন্তু কোন আপত্তি তোলে নাই। এটা এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে আসছে তখনি আপত্তি আসছে। আপত্তিগুলোর কারণ তো আমাদের আগে জানাবেন। আর এটা তো হাসপাতাল হচ্ছে। এমন কোন ইয়ে হচ্ছে না…। হাসপাতাল হচ্ছে মেডিকেল কলেজ হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে…। এক শ্রেণির মানুষ আছে যাদের কোনও কাজই ভালো লাগে না। সেটা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। এটা কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত নাকি সত্যিকারভাবে চিটাগং এর মানুষের স্বার্থের কথা বলা হচ্ছে।’
সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ ইস্যুতে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দ্বিধা বিভক্তির প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রী সুজন বলেন, ‘সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমাদের তো গার্জিয়ান একজন আছেন। কাজেই এই জায়গা থেকে আমরা নিরাপদ। আমাদের সর্বোচ্চ একজন গার্জিয়ান আছেন। উনি সর্বশেষ যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা সবার জন্য শিরোধার্য।’